WhatsApp Channel
Follow Now
Telegram Group
Follow Now
Last updated on July 4th, 2023 at 12:49 am
আজকে আমি আপনাদের সঙ্গে একটি Voyanok Bhuter Golpo শেয়ার করছি, গল্পটির নাম “দেহধারী পিশাচ” আশাকরি আপনারা সকলে গল্পটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং গল্পটি যদি শুনতে চান তাহলে পরে নীচে দেওয়া অডিও ফাইলে ক্লিক করে শুনতে পারেন।
Vuter Golpo পড়তে ছোট বড় সকলেরই ভালো লাগে। তাই একটি খুব ভয়ঙ্কর ভুতের গল্প আপনাদের জন্যে নিয়ে এসেছি। গল্প টি পড়ে কেমন লাগলো অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন। আরও Bangla Golpo এবং Bangla Shayari পড়ার জন্য আমাদের ব্লগ টিকে সাবস্ক্রাইব করতে পারেন।
Bhayankar Bhuter Golpo
আজকের গল্প – দেহধারী পিশাচ
“মানুষ কি নিজে থেকে ভয় পেতে চায় ?
হ্যাঁ, অবশ্যই চায়…..
অনেক উদাহরণ রয়েছে পৃথিবীর আনাচে কানাচে।
আপনি কি জানেন, পৃথিবীতে ভয় পাবার সরঞ্জাম কত ধরণের রয়েছে?
জানেন না তো। জানতাম। এমন কিছু ভয়ঙ্কর খেলা রয়েছে পৃথিবীতে, যা একবার খেলতে শুরু করলে সুস্থ হয়ে বেঁচে ফেরার আশা খুবই কম।
এমন অনেক সঙ্গীত আছে যা আপনার মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে সক্ষম। এমন অনেক ভয়ঙ্কর ভিডিও আছে যা দেখলে ভয়ে মুহূর্তের মধ্যে আপনার মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তা সত্ত্বেও মানুষের মন বারংবার স্বেচ্ছায় ধরা দেয় এই ভয়ের কবলে। তাহলে কি দাঁড়ালো, ভয় হল একটি মনের ভাব। আপনি যদি মনকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে পারেন তাহলে কোনো ভয়ই আপনাকে কাবু করতে পারবে না। বুঝলেন ম্যাডাম , কি হল..! “
এতক্ষন মন্ত্রমুগ্ধের মত ডঃ সৌরিশ হালদার-এর কথাগুলো একাগ্রতার সহিত আত্মস্থ করছিল মনামী। ওদের সম্পর্কটা একটু কমপ্লিকেটেড। সৌরিশ সম্পর্কে মনামী-এর মেসো কিন্তু বয়সের তেমন ফারাক নেই ওদের মধ্যে। সৌরিশ পেশায় একজন খ্যাতনামা মনোবিজ্ঞানী সাথে চিকিৎসক।
সৌরিশ -এর বিয়ে হয়েছে একবছর হল। বিয়ের সময় বললে ভুল হবে বিয়ের আগে থেকেই ফেইসবুক-এর মাধ্যমে আলাপ হয় মনামী আর সৌরিশ-এর। সম্পর্কটা বন্ধুত্বের মনে হলেও পরস্পরের প্রতি পরস্পরের একটা দুর্বলতা ছিল প্রথম থেকেই।
কিন্তু ঘটনা চক্রে ওদের প্রেমের কুঁড়ি ফোঁটার আগেই ঝরে যায় চিরতরের জন্য। যদিও এই সামাজিক বিচ্ছেদ ওদের বন্ধুত্বের মাঝে কোনো দেওয়াল তৈরী করতে পারেনি কোনোদিন। প্রায়শই সময় পেলেই সৌরিশ-এর চেম্বারে পৌঁছে যায় মনামী। বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে আলোচনা এমনকি তর্কাতর্কি পর্যন্ত হয় ওদের মধ্যে।
স্বপ্নের ঘোর কাটতেই মনামী বলল,
” আজ তবে আসি সৌরিশদা। আবার অন্য একদিন আসবো।”
সৌরিশ বলল,
” আরে দাঁড়ান। আপনাকে আজ একজনের সঙ্গে পরিচয় করাবো। চলুন আমার সাথে।”
দুজনে মিলে বেরিয়ে গেলেন চেম্বার থেকে।
ফিমেল ওয়ার্ডের ১০২ নম্বর কেবিন, হাত পা শিকল দিয়ে বাধা রয়েছে বছর তিরিশের মেয়েটি। হসপিটালে এডমিট হয়েছে গত পরশু রাতে, মেনরোডের ধারে একটা মৃত কুকুরের মাংস ভক্ষণ করছিল। এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের বদান্যতায় উদ্ধার করে এখানে আনা হয়েছে, এখন ট্রিটমেন্ট চলছে।
আরও পড়ুনঃ
সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই মেয়েটি এক অদ্ভূত দৃষ্টি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে সৌরিশ আর মনামীকে। কি গভীর সেই দৃষ্টি ! যেন ভিতর থেকে সব কিছুকে টেনে হিঁচড়ে বার করে আনছে। মনামী বেশিক্ষন ওই মেয়েটির দিকে তাকাতে না পেরে মুখ নামিয়ে নিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়।
এটাই মনামীর দোষ কোনো কিছুতেই এতটা বেশী ভয় পেয়ে যায় ও, যে হৃদস্পন্দন বাড়তে থাকতে দ্রুত গতিতে, হাত পা কাঁপতে থাকে সাথে সাথে দুচোখে অন্ধকার নেমে আসে। এবারও তাই হল। ফ্লোরের উপর লুটিয়ে পড়ল মনামী।
জ্ঞান যখন ফিরল তখন ও বাড়িতে নিজের বেড রুমে। যন্ত্রনায় মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে। বেজে উঠল মোবাইলটা,
— ” হ্যালো !”
— ” কি ম্যাডাম, জ্ঞান ফিরেছে আপনার ? চিন্তা করবেন না। আমি একটা ঘুমের ইনজেকশন দিয়েই পাঠিয়েছি আপনাকে। খুবই জোরালো একটা ঘুম হবে আজ। কাল একদম ফুরফুরে। ওহঃ একটা কথা আপনার ব্যাগে ভুল করে আমার রিসার্চ ওয়ার্কের প্রয়োজনীয় একটি সিডি চলে গেছে।
কিন্তু আপনাকে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি ওটা প্লিজ দেখবেন না। খুবই ডিস্টার্বিং কনটেন্ট রয়েছে ওটাতে। কাল আমি আপনার অফিসে ওটা এসে নিয়ে যাব। ওকে বাই। গুড নাইট।”
জ্ঞান ফিরলেও কোনো এক অজানা নেশায় আক্রান্ত মনামীর সারাটা শরীর। বিছানা থেকে উঠে সোজা চলে যায় ডাইনিং রুমের। অফিসের ব্যাগ হাতড়ে বের করে সিডি। কম্পিউটারের সামনে বসে পড়ে একটা অস্পষ্ট দৃষ্টি নিয়ে। সিডি অন হতেই মনামী দেখতে পায় একটি মেয়ে হাত পা বাধা অবস্থায় চেয়ারে বসে আছে। যে ঘরটিতে মেয়েটিকে রাখা হয়েছে সেটি চতুর্দিক বন্ধ। সিলিং থেকে একটি বাল্ব ঝুলছে।
হঠাৎ করেই মেয়েটির শরীরের বর্ণ দ্রুত পরিবর্তিত হতে শুরু করে। ক্রমশ গাঢ় নীল হয়ে যাচ্ছে সারা শরীর । মুখ বেঁকে যেতে শুরু করেছে, শরীরের হাড়গুলি একটা একটা করে ভেঙে যাচ্ছে শব্দ করে। মেয়েটির ঘাড়ের দুপাশ দিয়ে দুটি কালো হাত জড়িয়ে ধরেছে ওকে। যন্ত্রনায় পাগলের মত ছটফট করছে, আপ্রাণ চেষ্টা করছে বাঁচার কিন্তু এই যাঁতাকল থেকে মুক্তি নেই ওর….
বাঁচাও ! বাঁচাও ! বলে চিৎকার করে উঠল মনামী। কিছুক্ষন পর আহহ্হহ্হ! ভয়ার্ত আর্তনাদ করে চেয়ার ছেড়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মনামী।
ঘন্টাখানেক পর…..
ঘরের দরজা খুলে প্রবেশ করেছেন একজন বহিরাগত। অন্ধকারে কিছুই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না। এগিয়ে আসতে আসতে বহিরাগত বললেন,
— ” মনামী ! আমি ঠিক সময়ে এসেছে তাই না। তুমি কি বেঁচে আছো ! ” অট্টহাস্য করে ওঠে বহিরাগত। জানলা দিয়ে প্রবেশ করা আলোয় বেশে ওঠে একটা বীভৎস অবয়ব, যা কল্পনার অতীত। কিন্তু আশ্চর্য, কন্ঠস্বর অবিকল সৌরিশ-এর মত।
— ” এবার যে তোমার দেহটা আমার চাই মনামী। কোথায় তুমি ? এত লুকোচুরি খেলতে নেই সোনা। এসো, এবার ধরা দাও আমার কাছে। “
দরজার কোণে বসে মাথা নিচু করে অনবরত দুলে চলেছে মনামী। পিশাচটি এগিয়ে গেল খুব সন্তর্পনে মনামীর দিকে। আক্রমণ করার জন্য বিষাক্ত নখরযুক্ত লোমশ হাতটা বাড়িয়ে দিতেই হাতের আয়নাটাকে উঁচিয়ে ধরল মনামী। নিজের প্রতিবিম্ব দেখা মাত্রই চিৎকার করে উঠল পিশাচটা।
সঙ্গে সঙ্গে পিছনে লুকিয়ে রাখা ছুরিটা সোজা ওর মাথার উপর সজোরে বসিয়ে দিল মনামী। প্রচন্ড আর্তনাদ করে পিশাচটা পড়ে যায় মাটিতে। উঠে পড়ে মনামী। চক্ষু দুটি তার রক্তবর্ণ মুখে একটা অচেনা পৌশাচিক হাসি। পড়ে থাকা নিথর দেহটিকে উদ্দেশ্য করে মনামী বলল,
— ” আহা রে ! এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলে প্রিয়। আমি অনেক আগেই বুঝতে পেরেছি তুমি ঠিক আসবে আমার দেহের খোঁজে। তাই একটা মিথ্যা অভিনয় চালিয়ে গেছি এতক্ষন ধরে।
শেষ হাসিটা তাহলে আমিই হাসলাম সৌরিশদা, কি বল। তুমি যে পিশাচের সাহায্য নিয়ে আমাকে মারতে চেয়েছিলে সে তো নিতান্তই শিশু। এর চেয়ে ঢের বেশী শক্তিশালী শয়তানকে যে আমি নিজের মধ্যে ধারণ করেছি। হা হা হা…….।
তুমি হয়ত জানো না, ডেমনোলোজি নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা আমার। দশ বছর আগে হিমাচলের কালো পাহাড়ে শয়তানের সাধনায় ৩০ জনের যে দলটি গিয়েছিল অদ্ভূতভাবেই তারা সবাই উধাও হয়ে যায়। দীর্ঘ দুই বছর পর ফিরে আসে ওই দলেরই একজন সদস্য । এই আমি, মনামী সিংহ রায়, এক দেহধারী পিশাচ। হা হা হা হা….. “
দেহধারী পিশাচ Voyanok Bhuter Golpo টি পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো মন্তব্য করে জানাবেন। যদি গল্পটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না।