বিশ্বকর্মা যোজনা ২০২৩ : চালু করছে কেন্দ্রীয় সরকার শিল্পী ও কারিগরদের উৎসাহিত করতে, আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর চালু হবে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Vishwakarma Yojana) জাতীয় দ্বারকার ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অ্যান্ড এক্সপো সেন্টারে এই নতুন প্রকল্পটি চালু করবেন।
স্বাধীনতা দিবসের দিন লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী জানান, ওবিসি শিল্পীদের উন্নতিতে প্রায় ১৪ হাজার কোটির বিনিয়োগ করবে কেন্দ্র সরকার। তিনি বলেন কলোনি, ঝুপড়ি, ভাড়া বাড়িতে থাকেন এমন ব্যক্তিদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেবে কেন্দ্র সরকার। আগামী মাসেই শুরু হবে এই যোজনা। সব মিলিয়ে ১৩,০০০ কোটি থেকে ১৫,০০০ কোটি টাকা সাহায্য করবে সরকার।
আগামী দিনে অনগ্রসর যেমন- ধোপা, নাপিত, জেলে, স্বর্ণকার ছাড়াও দিনমজুররাও পাবেন এই নতুন প্রকল্পের সুবিধা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই প্রকল্পটি বিশ্বকর্মা পুজো অর্থাৎ ১৭ সেপ্টেম্বর সোমবার থেকে শুরু হবে।
বিশ্বকর্মা যোজনা ২০২৩
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনার অধীনে, ২০২৩-২৪ আর্থিক বছর থেকে ২০২৭-২৮ আর্থিক বছর পর্যন্ত অর্থাৎ পাঁচ বছরে ১৩০০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এটি বিশ্বকর্মা জয়ন্তী উপলক্ষে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে। এর আওতায় এমন কর্মীরা সুবিধা পাবেন, যারা দক্ষতা সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত এবং যেখানে এখনও গুরু-শিষ্যের ঐতিহ্য চলছে। মন্ত্রী বলেছেন যে এই প্রকল্পটি ৩০ লক্ষ ঐতিহ্যবাহী কারিগরদের উপকৃত করবে।
প্রকল্পের নাম | প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা |
উদ্বোধন করবেন | প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি |
বিভাগ | আত্মনির্ভর ভারত |
সুবিধা | প্রথম দফায় ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে ও দ্বিতীয় দফায় ঋণ দেওয়া হবে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। |
বাজেট | ১৩,০০০ কোটি থেকে ১৫,০০০ কোটি টাকা। |
উদ্বোধন | ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ |
ওয়েবসাইট | https://pmvishwakarma.gov.in/ |
- আরও পড়ুন:
- 👉 কৃষক বন্ধু স্ট্যাটাস চেক ২০২৩
বিশ্বকর্মা যোজনা এর সুবিধা কারা পাবেন
এই বছর বাজেটে ‘বিশ্বকর্মা যোজনা প্রকল্প’র কথা ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি তখন জানিয়েছিলেন, এই প্রকল্পের জন্য স্বর্ণকার, ধোপা, নাপিত, জেলে, দক্ষতা সম্পন্ন কারিগররা একাধিক সুবিধা পাবেন। এছাড়াও আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি, কারিগরদের প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ও পণ্যের প্রচার কীভাবে করতে হয়, তাও শেখানো হবে বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে।
বিশ্বকর্মা যোজনা এর মাধ্যমে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অধীনে মন্ত্রীসভার এক বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, এই প্রকল্পের অধীনে প্রথমে দেশের কারিগরদের খুব কম সুদে ঋণ দেওয়া হবে। প্রায় ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হতে পারে। প্রথম দফায় ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে ও দ্বিতীয় দফায় ঋণ দেওয়া হবে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। সুদ দিতে হবে কেবল মাত্র ৫ শতাংশ হারে। জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ১৩ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে।
বিশ্বকর্মা যোজনা আবেদন করার পদ্ধতি
আবেদন করার জন্যে আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে https://pmvishwakarma.gov.in/ – এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন সম্পূর্ণ করতে হবে, তবে এর জন্য আপনাকে কোনো অনলাইন ক্যাফেতে যেতে হতে পারে অথবা নিজের মোবাইল দিয়েও আবেদন ফর্ম ফিলাপ করতে পারেন।
কামার, কুমোর, রাজমিস্ত্রি, ধোপা, ফুল বিক্রেতা, মাছের জাল তাঁতি, তালা এবং চাবি বানানোর কারিগররা, ভাস্কর ইত্যাদি সম্ভাব্য কারিগরদের মধ্যে গণনা করা হচ্ছে যারা কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বৈষ্ণব বলেছেন যে গ্রামীণ অর্থনীতিতে এই লোকদের খুব গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তাই তাদের কথা মাথায় রেখেই এই প্রকল্প শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বিশ্বকর্মা যোজনা কি
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনার অধীনে, কীভাবে আরও দক্ষতা বিকাশ করা যায় সেদিকে মনোযোগ দেওয়া হবে এবং ঐতিহ্যবাহী শ্রমিকদের নতুন ধরণের সরঞ্জাম এবং নকশা সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের অধীনে, ঐতিহ্যবাহী শ্রমিকদের আধুনিক সরঞ্জাম ক্রয়ের ক্ষেত্রেও সাহায্য করা হবে। প্রকল্পের অধীনে, দুই ধরনের দক্ষতা উন্নয়ন কোর্স – মৌলিক এবং উন্নত – পরিচালিত হবে। কোর্স করা শ্রমিকদের সরকার উপবৃত্তি প্রদান করবে। প্রতিদিন ৫০০ টাকা হারে উপবৃত্তি দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনার প্রথম ধাপে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে, যার সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ। এর পরে, দ্বিতীয় পর্যায়ে, যোগ্য কর্মীরা প্রত্যেকে ২ লাখ টাকা ছাড়ের ঋণ পাবেন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনার অধীনে, কারিগর এবং কারিগরদেরও প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা শংসাপত্র এবং পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। আধুনিক যন্ত্রপাতি কিনতে ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্র সরকার এই প্রকল্পের অধীনে পাঁচ বছরের (FY24-28) মেয়াদের জন্য ১৩,০০০ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে। এই প্রকল্পের অধীনে সর্বনিম্ন বয়স রাখা হয়েছে ১৮ বছর। পরিবারের মাত্র একজন সদস্য এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবে। আবেদনকারীদের একটি স্ব-ঘোষণা ফর্মও দিতে হবে।