প্রজাতন্ত্র দিবস সম্পর্কে দুটি বাক্য: ভারত বর্ষের গণতন্ত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিন টি হলো প্রজাতন্ত্র দিবস। ১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট স্বাধীনতার স্বাদ পায় ভারত বর্ষের মানুষ। আর ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হল ভারতীয় সংবিধান। সেই থেকেই ২৬ জানুয়ারি দিনটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
প্রজাতন্ত্র দিবস সম্পর্কে দুটি বাক্য
১৯৪৯ সালের ৯ ই নভেম্বর গণ পরিষদের প্রথম অধিবেশনে যোগ দেয় ২০৭ জন সদস্য। সভার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ‘ভারতীয় সংবিধানের রূপকার’ ভীম রাও আম্বেদকর। ২৬ নভেম্বর গৃহীত হল ভারতীয় সংবিধান। কার্যকর হল আরও মাস দুয়েক পর, অর্থাৎ ২৬ জানুয়ারি, ১৯৫০
২৬ জানুয়ারি দিনটিকে মহাত্মা গান্ধী নাম দিয়েছিলেন, ‘স্বতন্ত্রতা সংকল্প দিবস’। জাতীয় কংগ্রেসের ১৯২৯ সালের অধিবেশনে পূর্ণ স্বরাজ-এর অঙ্গীকার নেওয়া হয়। এরপরেই ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি দিনটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে আলাদা করে দিনটির গুরুত্ব ছিলই।
ভারতীয় সংবিধান রচনা করতে মোট সময় লেগেছিল ২বছর ১১মাস ১৮দিন। সংবিধান রচনার পূর্বে মোট ১৬৬টি অধিবেশন বসেছিল। মূল ভারতীয় সংবিধানে ৩০৮জন সদস্যের স্বাক্ষর আছে।এই সদস্যরা ২৪শে জানুয়ারি ১৯৫০সালে তাদের স্বাক্ষর করেন।
- ভারতীয় সংবিধানের আসল খসড়াটি আজও সংরক্ষিত আছে সংসদ ভবনে। যেটি দুটি ভাষায় রচিত হয়েছিল – ইংরাজি এবং হিন্দিতে।
- ভারতীয় সংবিধানকে পৃথিবীর দীর্ঘতম সংবিধান বলা হয়। এটি ২২টি অংশ ও ৪৪৮ নিবন্ধে রচিত।
- সংবিধানের এই খসড়া তৈরিতে কাজ করেছিল ড্রাফটিং কমিটি।
- সংবিধান রচনার ক্ষেত্রে কাজ করেন ৩০৮ জন সদস্য।
- চূড়ান্তভাবে সংবিধান গৃহীত হওয়ার আগে গণপরিষদে এই খসড়া সংবিধানটি নিয়ে আলোচনার জন্য ১৬৬ বার অধিবেশনে ডাকা হয় সদস্যদের।
- প্রজাতন্ত্র দিবসের ভাষণটি ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রদান করেন এবং স্বাধীনতা দিবসের দিনটিকে সম্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
- ১৯৫০ সালে সংবিধান রচনার পর ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
২৬ জানুয়ারি মানেই ভারতের রাজধানী দিল্লির রাজপথে কুচকাওয়াজ ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এর পাশাপাশি কলকাতার রেড রোডেও সেই আয়োজন ও আড়ম্বর চোখে পড়ে। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিন সন্ধ্যায় অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ভারতের রাষ্ট্রপতি।
বিভিন্ন বিদেশের অতিথি অভ্যাগতরা প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত থাকেন। প্রতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান দেখতে কলকাতার রেড রোড চত্বরে ভিড় জমান অসংখ্য মানুষ।
দেশের জন্য প্রাণপণ লড়াইয়ে থাকা স্বাধীনতা সংগ্ৰামীদের এই দিনটিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। একের পর এক বীর সংগ্ৰামীদের আত্মাবলিদানকে স্মরণ করা হয়। ২৬ জানুয়ারি প্রচুর সংগ্ৰামীর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রকে উদযাপন করা হয়। আট থেকে আশি সবাই এক উৎসবে সামিল হন এই দিনটিতে।