আজকের এই নিবন্ধে ৫ টি বাছাই করা মহালয়ার কবিতা, দেবীর আগমনী নিয়ে কবিতা, আজকের দুর্গা কবিতা ও আগমনী কবিতা তুলে ধরবো আশাকরি প্রতিটি দূর্গা পূজার কবিতা আপনার খুবই ভালো লাগবে।
বাঙালির দুর্গাপূজা মহালয়া থেকে শুরু হয়, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে আসে শারদ প্রান্ত শুনতে শুনতে বাংলার বুকে সূচিত হয় দেবিপক্ষ। এই দিন থেকে বাঙালির ঘরে পুজোর রব ছড়িয়ে পড়ে। মহালয়া যেন দেবী দুর্গার আবহন বার্তা বয়ে আনে প্রতিটি মানুষের হৃদয়।
“মহালয়া “শব্দটির অর্থ মহান যে আলোয়। মহালয়া শব্দটিকে স্ত্রীলিঙ্গবাচক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয় কারণ এই দিনে পিতৃপক্ষের অবসান হয়। এবং অমাবস্যার অন্ধকার দূর হয়ে আলোকময় দেবী পক্ষের শুভরম্ভ হয়। এই দেবী দুর্গাই হলেন সেই মহান আলয়। এই দিনে পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে দেবী পক্ষের সূচনা ঘটে।
মহালয়ার কবিতা
এই মহালয়ার দিনেই দেবী দুর্গার বোধন হয়। বোধন মানে জাগরন। মনে করা হয় বাংলার শ্রাবণ মাস থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত দক্ষিণায়ন কালে দেবতারা নিদ্রা যান। আর উত্তরায়নের সময় দেবতারা আবার জেগে ওঠেন। পুরান মতে ব্রাহ্মণ নির্দেশ মতে পিতৃপক্ষের অবসানে টানা ১৫ দিন ধরে স্বর্গীয় পিতৃপুরুষেরা মর্ত্যের কাছাকাছি আসেন। আর তাই এই সময় তাদের উদ্দেশ্যে কিছু অর্পণ করলে তারা তুষ্ট হয়।
আজকের দুর্গা কবিতা
লেখক – মোহন দাস
আজকের দুর্গা ছিন্ন বস্ত্রে
আঁধার ঘরে কাঁদে,
আজকের দুর্গা শকুনির খাদ্য
পরে থাকে খাঁদে।
আজকের দুর্গা শক্তিহীন
লাঞ্চিত নির্যাতিত,
আজকের দুর্গা পতিতাও বটে
স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত।
আজকের দুর্গা ভয়ে ভয়ে
থাকে আমি জানি,
আজকের দুর্গা নিপীড়িত
মেনে নেয় শ্লীলতাহানি।
আজকের দুর্গা স্তব্ধ ভীষণ
ঘটুক যতই অন্যায়,
আজকের দুর্গা ত্রিশূল হাতেও
অপরাধীকে ছেড়ে দেয়।
আজকের দুর্গা মাটির মূর্তিই
কোনো শক্তি নেই,
আজকের দুর্গা মৃত প্রায়
তাই মারছে – সকলেই।
- আরও পড়ুন:
- 👉 মহালয়া লিরিক্স
- 👉 মা দুর্গা প্রণাম মন্ত্র
- 👉 ১০ টি সেরা দূর্গা পূজার কবিতা
মায়ের আগমনী কবিতা
মাগো তুমি আসবে বলে …হৃদয় জুড়ে খুশির লহর! ওমা তোমার পথ চেয়ে আমি শুধুই গুনি প্রহর, জানি মা তুমি আসছো তাইতো মেয়েদের আনাগোনা
মাঠে মাঠে তাই কাশফুল ফোটে ভোরের ঘাসে শিশির কণা তোমার আসার আগমনী সুর তোলে প্রাণে এক হিল্লোল
খুশিতে বিভোর বসুন্ধরা আবেগে বিহবল!
মাগো তোমার মধুর রূপে মজে যায় ত্রিভুবন!
মৃন্ময়ী তুমি কৃপা কর সবে এই বলি সারাক্ষণ।
অশুভ থেকে শুভর দিকে আঁধার থেকে আলোতে মৃত্যুর থেকে অমৃতের পথে নিয়ে চলো মাগো তব জয় রথে-
কবিতা – মহালয়ার ভোরে
লেখিকা – মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় দাস
একটা ছেলে ডিঙির কোণে একলা যে বায় দাঁড়, শাপলা তোলে, পদ্ম তোলে, একলা গাঁথে হার৷ পালক ছেঁড়া মেঘ আকাশে, বক ভাসানো হাওয়া, শিরশিরানি শিশির ঝরে শিউলিতলা ছাওয়া৷
সোনার রোদে রূপালি কাশ কতই ছবি আঁকে, একলা থাকা সেই ছেলেটার পড়ছে মনে মা’কে৷ মহালয়ার ভোর না হতেই বেয়েই ডিঙিখানা দুগ্গাতলায় দুঃখি ছেলে চুপ করে দেয় হানা৷
একচালাতে মাটির দেবী ফিক করে তাই হাসে, কোঁকড়া চুলের গোছ সরিয়ে ছেলের কাছে আসে৷ মায়ের গায়ের গন্ধ আসে, ঠিক যে শিশুবেলা, মহালয়ার এই ভোরে আজ বসল মিলন মেলা৷
মহালয়া কবিতা
লেখক – অজিত কুমার কর
মাতৃপক্ষ শুরু
মহালয়ার ভোরে
আলোর বেনু উঠল বেজে
গৌরী এলো দোরে।
প্রাণের সাড়া চতুর্দিকে
আলোকধারায় আঁধার ফিকে
কয়েকটাদিন পরেই হবে
মহামায়ার বোধন।
পদ্ম মেলে আঁখি
শিশির পড়ে ঘাসে
হিমেল হাওয়ায় স্নিগ্ধ পরশ
প্রস্ফুটিত কাশে।
নীল আকাশে মেঘের খেলা
শরৎঋতুর মিলনমেলা
কেমন যেন আকুল করে
মায়াবী এই ক্ষণ।
প্রহর গনা শেষ
পুলক জাগে মনে
উঠল মেতে বঙ্গবাসী
মায়ের আগমনে।
সবাই নতুন সাজে
ঢাকের বাদ্যি বাজে
খাঁচার ভিতর রবে না কেউ
বেড়ায় উড়ে মন।
কবিতা – মহালয়া
লেখক – সৌম্যকান্তি চক্রবর্তী
আজি এ সুপ্রভাতে …
অজস্ৰ শঙ্খনিনাদে ..
আমার নয়নপাতে ..
অমলমুরতি ধরি ..
এলে মাগো দশভূজা ..
কোন্ অপরূপ সাজে …
আকুল মনপবনে ..
তব পদধ্বনি বাজে ;
এলে সুনয়না মধুর বেশে ..
ভরালে এ মন অধীর আবেশে !
শিশিরকণায় শেফালীকা ফুলে ..
তোমার সে রূপে সবই গেছি ভুলে !
পরমা প্রকৃতি শক্তিস্বরূপা …
ভবানী মা তুমি জগদম্বিকা !
মৃণ্ময়ী নও চিন্ময়ী মাগো …
প্রকৃতির মাঝে তুমি সদা জাগো !
হৃদয় আলয়ে তোমার শোভা ..
তোমার মূর্তি বড় মনোলোভা !
মনের অসুর দমন করে ,
তোমায় প্রণমি ও মা করজোড়ে !
দেবীপক্ষের এ মহাতিথিতে ..
এসো এসো মাগো এই ধরণীতে …
তোমার ধেয়ানে তোমার স্তুতিতে
হল মহালয়া এই পৃথিবীতে ..
৫ টি সেরা মহালয়ার কবিতা | Mahalaya Kobita in Bengali কবিতা গুলো আপনার কেমন লাগলো মন্তব্য করে জানাবেন যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না আরও নতুন নতুন তথ্য পাওয়ার জন্যে আমাদের ওয়েবসাইট টি সাবস্ক্রাইব করতে পারেন।