আজকের এই শুভ দিনে জন্মাষ্টমী নিয়ে কবিতা অর্থাৎ ৫ টি বাছাই করা জন্মাষ্টমীর কবিতা, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কবিতা আপনাদের সকলের সঙ্গে শেয়ার করবো।
পুরান মতে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টম তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। সনাতন ধর্মালম্বীদের বিশ্বাস পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল।
তাদের আরো বিশ্বাস, দুষ্টের দমন করতে এভাবেই যুগে যুগে ভগবান মানুষের মাঝে নেমে আসেন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন।
জন্মাষ্টমী নিয়ে কবিতা
কৃষ্ণ পক্ষ,অষ্টমী তিথি, তিমিরা রজনী,
মধ্যম নিশিথে জন্ম নিলেন কৃষ্ণ যাদুমণি!
লোহার বেষ্টনী ঘেরা কংস কারাগার,
দৈবকির কোলে জন্ম নিলেন, শ্রী কৃষ্ণ আমার!
ঘুমেতে ঢলিয়া পড়ে কারারক্ষীগন,
দৈবকীর অঙ্কে কৃষ্ণ জন্মিলেন যখন!
অবিরাম বরিষন, ঘন কালো মেঘ,
বিজুরী খেলিয়া যায়, অশনি সংকেত!
গুরু গুরু গরজে, আসমানে জলধর,
অবিরল শ্রাবণধারা, অঝোরে ঝর্ ঝর্!
সৌদামিনী অন্তরীক্ষে খেলে আচম্বিতে,
অচিরপ্রভা ধাঁধায় চক্ষু পথিকে ধাঁধিতে!
যখন কৃষ্ণ জন্ম নিল কংস কারাগারে,
স্বর্গ হইতে দেবগন পুষ্প বৃষ্টি করে!
দৈববানী হয়েছিল কংস নৃপতিরে,
অষ্টম গর্ভজাত দৈবকীর ,বধিবে তাহারে!
সেইহেতু কংস রাজা চিন্তিত অন্তরে,
যখন কৃষ্ণ জন্ম নিল দৈবকী উদরে!
পিতা বসুদেব হইয়া চিন্তায় মগন,
কিকরে রক্ষিবেন তিনি স্নেহের কৃষ্ণধন!
শ্রীকৃষ্ণে লইয়া বসুদেব গোকূলেতে চলে,
যমুনা উজান বয় ,বারিধি উছলে !
কিকরে যমুনা পার হবে ,বসুদেব ভাবে মনে মন,
শৃগাল রূপী ভগবান ,যমুনা পারাপার করেন তখন!
মা যশোদার কোলে কৃষ্ণ অর্পন করিয়া,
সাথে লয়ে যোগমায়া, বসুদেব আসিল ফিরিয়া!
কৃষ্ণের জন্ম শুনে কংস ,কারাগারে.আইল,
দৈবকী হইতে তারে কাড়িয়া লইল!
কন্যা সন্তানে কংস, পাথরে আছাড়িল,
তৎক্ষনাৎ আকাশে, যোগমায়া রূপ ধারন করিল!
যোগমায়া প্রকাশিল ,কংসের সকাশে , কংস!
তোমারে বধিবে যে, গোকূলে বাড়িছে সে!
- আরও পড়ুন:
- 👉 শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী পূজার মন্ত্র , ব্রত কথা ও পূজা পদ্ধতি
- 👉 Happy Janmashtami Wishes in Bengali
- 👉 শুভ জন্মাষ্টমী শুভেচ্ছা বার্তা, স্ট্যাটাস ও ছবি
জন্মাষ্টমীর কবিতা
শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী
লেখক – লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী তিথি পবিত্র দিবসে,
মহিলা, কুমারী, বালা থাকে উপবাসে।
যুবতীরা সকলেই উপবাস করে,
মনোমত লভে পতি শ্রীকৃষ্ণের বরে।
জন্মিল যখন কৃষ্ণ কংস কারাগারে,
বসুদেব রাখি এলো যমুনার পারে।
শ্রাবণে বাদলধারা ঝর ঝর ঝরে,
কড় কড় ডাকে মেঘ অম্বরে অম্বরে।
বিজুলি ঝলসি উঠে ঘন কৃষ্ণ মেঘে,
কৃষ্ণ লয়ে বসুদেব ধায় দ্রুতবেগে।
বসুদেব নামি পড়ে যমুনার জলে,
শৃগালে দেখায় পথ অগ্রে অগ্রে চলে।
মুষল ধারায় বৃষ্টি অবিরাম ঝরে,
বাসুকি ধরিল ফনা মস্তক উপরে।
যমুনার পারে আছে নন্দের ভবন,
নন্দের ভবনে কৃষ্ণ বাড়ে অনুক্ষণ।
শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা শুন দিয়া মন,
জন্মাষ্টমী কাব্য লিখে শ্রীমান লক্ষ্মণ।
শুভ কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী নিয়ে কবিতা
কবিতা – কৃষ্ণ প্রেম
লেখক – সৌমেন চক্রবর্তী
কৃষ্ণ, কৃষ্ণ , বলে মুদিলাম আঁখিতবু কৃষ্ণ আমার ধরা নাহি দেয় সখী।দিবারাত্র নয়ন জলে ভাসাই লাম দুই আঁখি।।ওরে ললিতা ওরে সখী বিশাখা কি দোষ করলাম তোরা বল দেখি।।ওই গোয়াল রাখাল দেখিবড়ই নিঠুর কানু।
মন নিয়ে করে খেলা অহরহ-প্রেমে পরিলাম এই গৌরাঙ্গী দেখিয়া কৃষ্ণ কালো তনু।।আমি চন্দভানু রাধে, জানি না মনের কি গোপন সাঁধেপড়িলাম প্রেমে, কৃষ্ণ সনে ,ভুলাইয়া লোকলাজ।প্রতীক্ষাতে হইল মলিন মোর রাধারানী সাজ।।ঘরেতে গঞ্জনা শাশুড়ি ননদে, পারিনা তা সইতেকৃষ্ণপ্রেমে অধীর হয়েছি পারি না তাদের কইতে।
রাধা বিনা কৃষ্ণ থাকলে হতো কি তা দামিরাধা বিনা কৃষ্ণ যেন মণিহারা ফণী।।বল বল সখী কৃষ্ণ কে গিয়াআসে যেন আজ ও যমুনার তীরে।।বলি ও তারে করিব প্রতীক্ষা তার পথ চেয়ে।।যেনো কানু আমার না যায় ভুলিয়া অসংখ্য সখীর ভিড়ে।।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কবিতা
শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরশ পাথরের ন্যায়।
এর সংস্পর্শে যেই আসেন শুদ্বাআত্মায়
পরিনত হয়ে যায়।
মন্দিরে শ্রীকৃষ্ণের দর্শনে পাপ মোচন
হয়। কৃষ্ণ মহাপ্রসাদে দেহ ও মন প্রবিত্র হয়।
মহাপ্রবিত্র কৃষ্ণ নাম জপে অতীতের সঞ্চিত পাপ ধংস হয়ে যায়। কৃষ্ণ কথা শ্রবনে হৃদয় শুদ্ধ হয়।
হাতে তালি দিয়ে কীর্তন করলে হাতের মন্দ রেখাগুলো নাশ হয় এবং শুভ রেখার উদয় হয়।
নৃত্য করে কীর্তন করলে দেহের পাপ ঝড়ে পড়ে যায়। সর্বোপরি বিন্দু থেকে সিন্ধু পর্যন্ত এমন কিছু নেই যে কৃষ্ণ সংঙ্গে লাভ না হয়।
কৃষ্ণ হচ্ছেন আলোর প্রকাশ আর কৃষ্ণ ব্যতীত সবই হচ্ছে মায়া অর্থাৎ অন্ধকার। এজন্যই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন কৃষ্ণ নামে সর্বসিদ্ধি লাভ হয়।
হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করুন সুখী হউন। হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে. হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে.
Janmashtami Poems in Bengali
শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা
লেখক – লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
শুভ জন্মাষ্টমী তিথি পূণ্য শুভক্ষণ,
কারাগারে জন্মিলেন দেবকী নন্দন।
যমুনার ওপারেতে নন্দের ভবন,
পুত্র লয়ে বসুদেব করিল গমন।
অশনি ঝলিছে মেঘে ঝরিছে বাদল,
উথাল পাথাল করে যমুনার জল।
পুত্র কোলে বসুদেব যমুনা কিনারে,
ভাবিছেন কি প্রকারে যাইব ওপারে।
শৃগালে দেখায় পথ অন্ধকার রাতে,
বসুদেব চলিলেন তার সাথে সাথে।
বাসুকি বিস্তারি ফণা ছত্র ধরে শিরে,
কৃষ্ণকোলে বসুদেব চলে ধীরে ধীরে।
শ্রী কৃষ্ণের জন্মকথা অমৃত সমান,
লিখেন লক্ষ্মণকবি কৃষ্ণ উপাখ্যান।
৫ টি সেরা জন্মাষ্টমী নিয়ে কবিতা গুলো আপনাদের কেমন লাগলো মন্তব্য করে জানাবেন যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না আরও নতুন নতুন পোস্ট পাওয়ার জন্যে আমাদের ওয়েবসাইট টি সাবস্ক্রাইব করতে পারেন নমস্কার।