গণেশ পূজার মন্ত্র বাংলা ( Ganesh Puja Mantra in Bengali ) : হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, সুখ-সমৃদ্ধির দেবতা শ্রী গণেশের জন্ম ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে। তাই প্রতি বছর এই সময় মহা ধুমধাম করে পালিত হয় গণেশ উৎসব। দশ দিন ধরে চলা গণেশোৎসব শুরু হয় ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে এবং শেষ হয় অনন্ত চতুর্দশীতে।
এ বছর ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথি শুরু হচ্ছে ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা ৩৯ মিনিটে। চতুর্থী শেষ হবে ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে। উদয়া তিথি অনুযায়ী ১৯ সেপ্টেম্বর গণেশ চতুর্থী উদযাপিত হবে। এই দিন থেকেই দশদিনব্যাপী গণেশোৎসব শুরু হবে।
গণেশকেবিঘ্ননাশকারী, শিল্প ও বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকএবং বুদ্ধি ও জ্ঞানের দেবতা রূপে পূজা করা হয়। বিভিন্ন শুভকার্য, উৎসব ও অনুষ্ঠানের শুরুতেও তাঁর পূজা প্রচলিত আছে।
গণেশ পূজার মন্ত্র বাংলা
গণেশ হলেন হিন্দুধর্মের সর্বাধিক পরিচিত ওসর্বাধিক পূজিত দেবতাদের অন্যতম। তিনিগণপতি, পিল্লাইয়ার বিঘ্নেশ্বর, যানইমুগতবন,বিনায়ক, গজপতি, একদন্ত ইত্যাদি নামেওপরিচিত। তিনি হলেন কার্যারম্ভের দেবতা, বিঘ্নঅপসারণকারী।
গণেশজি হলেন এক মহাশক্তি ও সাফল্যের দেবতা। তিনি মানুষের জাগতিক ও পারমার্থিক পথের বাধা ও বিপত্তিনাশক। অহংকার, স্বার্থপরতা ও গর্ববোধের বিনাশক।
পার্বতীপুত্র শিক্ষা, জ্ঞান, মেধা, প্রবল ইচ্ছাশক্তি, বুদ্ধি, সাহিত্য, কাব্যরস, কলা, স্থাপত্যশিল্প ও সম্পদের দেবতাও বটে। আরাধনায় প্রসন্ন হলে গণেশ এসবই উপাসককে দান করেন অকাতরে। পাঁচজন প্রধান দেবতার মধ্যে অন্যতম বলা হয় গণেশকে।
- আরও পড়ুন:
- 👉 Happy Ganesh Chaturthi Wishes in Bengali
- 👉 গণেশ ঠাকুরের ছবি, ফটো, পিকচার hd
- 👉 শুভ গণেশ চতুর্থী শুভেচ্ছা বার্তা, স্ট্যাটাস ও ছবি
- 👉 গনেশ পূজা পদ্ধতি, মন্ত্র, পূজার উপকরণ ও নিয়ম PDF
Ganesh Puja Mantra in Bengali
ভাদ্রপদ মাসের শুক্ল পক্ষের চতুর্থী তিথিতে সুখ-সমৃদ্ধির দেবতা বিঘ্নহর্তা গণেশের জন্ম হয়। তাই প্রতি বছর এই তিথিতে গণেশ উৎসব পালিত হয়। চতুর্থী তিথি থেকে শুরু করে অনন্ত চতুর্দশী পর্যন্ত দশ দিন ধরে গণেশ উৎসব পালিত হয়। বাড়িতে ও সার্বজনীন ভাবে গণেশ পুজো করা হয়ে থাকে।
শ্রী গনেশ প্রণাম মন্ত্র
একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদরং গজাননম্।
বিঘ্ননাশককরং দেবং হেরম্বং প্রণমাম্যহম্।।
বাংলা অনুবাদ – যিনি একদন্ত, মহাকায়, লম্বোদর, গজানন এবং বিঘ্ননাশকারী সেই হেরম্বদেবকে আমি প্রণাম করি।
সরলার্থ – যিনি এক-দাঁত-বিশিষ্ট, যার শরীর বিশাল, লম্বা উদর, যিনি গজানন এবং বিঘ্ননাশকারী, সেই হেরম্বদেব গণেশকে প্রণাম জানাই।
একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদর গজাননম।
বিঘ্নবিনাশকং দেবং হেরম্বং পনমাম্যহম।।
অর্থাৎ, যিনি একদন্ত, মহাকায়, লম্বোদর, গজানন এবং বিঘ্ননাশকারী সেই হেরম্বদেবকে আমি প্রণাম করি।
গণেশ গায়ত্রী মন্ত্র
ওঁ তৎপুরুষায় বিস্মহে বক্রতুণ্ডায়
ধীমহি তন্নো দন্তী প্রচোদয়াৎ।।
গণেশ ধ্যান মন্ত্র
ওঁ খর্বং স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং সুন্দরং প্রস্যন্দম্মদগন্ধলুব্ধ মধুপব্যালোলগণ্ডস্থলম্।
দন্তাঘাত বিদারিতারিরুধিরৈঃ সিন্দুরশোভাকরং, বন্দেশৈল সুতাসুতং গণপতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম্।।
গণেশের প্রার্থনা মন্ত্র
দেবেন্দ্রমৌলিমন্দারমকরন্দকণারুণাঃ।
বিঘ্নং হরন্তু হেরম্বচরণাম্বুজরেণবঃ।।
অর্থাৎ, দেবরাজ ইন্দ্রের মস্তকে বিরাজিত
মন্দারপুষ্পের পরাগসমূহের দ্বারা রক্তিম হেরম্বের পাদপদ্মের রেণুসমূহ আমার বিঘ্নহরণ করুক।
গণেশের পুষ্পাঞ্জলী মন্ত্র
বিঘ্নেশ্বরায় বরদায় সুরপ্রিয়া
লম্বোদরায় সকলে জগৎদ্বয়
নাগননাথ শ্রুতযজ্ঞ বিভূষিতয়
গৌরীসুর গণনাথ নমৌ নমস্তুতে
একদন্তায় শুদ্ধায় সুমুখায় নমো নমঃ
প্ৰপন্নজন পালায় প্রনতার্তি বিনাশিনে
গণেশ বন্দনা বাংলা
প্রণামো চরণে প্রভু দেব গজানন।
তোমার স্মরণে হয় বিঘ্নবিনাশন।।
একদন্ত গজানন চতুর্ভূজ ধারী।
খর্বকায় স্থুলতণু লম্বোদরধারী।।
দিব্য দেহে শোভা পায় নানা আভরণ।
দিব্যমালা কণ্ঠে তুমি করিছা ধারণ।।
রক্তবর্ণ দেহ তোমার মুষিক বাহণ।
সর্ব দেব-দেবী আগে তোমার পুজন।।
বিরাজিত তুমি দেব রত্ন সিংহাসনে।
বারে বারে প্রণাম করি দুখানি চরণে।।
বন্দ দেব গজানন বিঘ্ন বিনাশন।
নমঃ প্রভু মহাকায় মহেশ নন্দন।।
সর্ববিঘ্ন নাশ হয় তোমার শরণে।
অগ্রেতে তোমার পূজা করিনু যতনে।।
নমো নমো লম্বোদর নমঃ গণপতি।
মাতা যার আদ্যাশক্তি দেবী ভগবতী।।
সর্বদেব গণনায় অগ্রে যার স্থান।
বিধি-বিষ্ণু মহেশ্বর আর দেবগণ।।
ত্রিনয়নী তারার বন্দিনু শ্রীচরণ।
বেদমাতা সরস্বতীর লইনু শরণ।।
মন্ত্রঃ – ওঁ গাং গণেশায় নমঃ।
ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ’ বা ‘ওঁ গাং গণেশায় নমঃ ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ’ বা ‘ওঁ গাং গণেশায় নমঃ
গণেশের প্রিয় ফুল
জবা ফুল- লাল জবা বা রক্তজবা গণেশের প্রিয় ফুল। মঙ্গল ও চন্দ্রের প্রতীক হল এই লাল জবা। এছাড়াও সমৃদ্ধি এবং অশুভের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয় এই লাল ফুলকে। তাই আজ এই ফুল অবশ্যই দেবেন গণেশকে। সেই সঙ্গে আরতির সময় পরিয়ে দিন জবার মালা।
জুঁই– জবার পাশাপাশি জুঁইয়ের গোড়ের মালাও গণেশের বিশেষ পন্দের। এই জুঁই হল একতার প্রতীক। আমরা সকলে যাতে একসঙ্গে হাতে হাত রেখে চলতে পারি তার জন্য জুঁই ফুল নিবেদন করা হয়।
অপরাজিতা ফুল- এদিন লাল জবার পাশাপাশি অপরাজিতার মালাও পরানো হয় গণেশকে। আর বলা হয় অবিবাহিত মেয়েরা যদি প্রতিদিন নীল ফুলে গণেশের পুজো করেন তাহলে তাঁদের তাড়াতাড়ি বিবাহ হয়।
গাঁদা– গাঁদা ফুল সর্বত্র পাওয়া যায়। আর এই ফুল গণেশের খুব প্রিয়। সেই সঙ্গে গাঁদা হল সুস্বাস্থ্যের প্রতীক।
গণেশ পূজার মন্ত্র বাংলা [ Ganesh Puja Mantra in Bengali ] আশাকরি গনেশ পূজার মন্ত্র গুলি আপনার পূজার কাজে যথেষ্ট সহায়তা করবে যদি পোষ্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না আরও নতুন নতুন তথ্য পাওয়ার জন্যে আমাদের ওয়েবসাইট টি সাবস্ক্রাইব করতে পারেন নমস্কার।