Bengali Story Reading Online | আকাশ ও নাবিলার ভালোবাসা

WhatsApp Channel Follow Now
Telegram Group Follow Now

Last updated on July 4th, 2023 at 12:49 am

Rate this post

আজকে আমি আপনাদের সঙ্গে Bengali Story Reading Online অর্থাৎ একটি অসমাপ্ত ভালো-বাসার গল্প শেয়ার করছি, গল্পটির নাম “আকাশ ও নাবিলার অসমাপ্ত ভালোবাসা” গল্পের প্রধান চরিত্রে আকাশ ও নাবিলা। আশাকরি আপনারা সকলে গল্পটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং গল্পটি যদি শুনতে চান তাহলে পরে নীচে দেওয়া অডিও ফাইলে ক্লিক করে শুনতে পারেন। আরও Bangla Golpo এবং Voyanok Bhuter Golpo পড়ার জন্য আমাদের ব্লগ টিকে সাবস্ক্রাইব করতে পারেন।

Bengali story reading online

 

Table of Contents

Bangla Short Story Reading Online

আজকের গল্প – আকাশ ও নাবিলার অসমাপ্ত ভালোবাসা

ফেইসবুক এর প্রতি আকাশের দুর্বলতাটা বরাবরই একটু বেশী। ফেইসবুকে চ্যাট আর এটা-ওটা করেই দিন চলে যেতো তার। বন্ধুদের স্ট্যাটাসে কমেন্ট করে আর গল্প করেই সে সব চাইতে বেশী সময় কাটাতো। কিন্তু যখন ফেইসবুক বন্ধুরা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকতো আর যখন গল্প করার জন্য কোনো বন্ধুকে অনলাইনে পাওয়া যেতো না তখনই আকাশের জীবনে নেমে আসতো একাকীত্বের ঘোর অন্ধকার।

 



 

এইভাবেই আকাশের সময় চলে যাচ্ছিলো তার নিজস্ব গতিতে। একদিন তার এক বোনের স্ট্যাটাসে আকাশ কমেন্ট করছিল । সেই স্ট্যাটাসেই আকাশের সাথে পরিচয় হয়েছিল নাবিলার সাথে। পরিচয়ের পর থেকেই আকাশ নাবিলার জন্য মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লো। তার মনের অজান্তেই সে নাবিলাকে ভালবাসতে আরম্ভ করেছিল। কেন যেন আকাশের মনে হতো নাবিলাই আকাশের সেই স্বপ্নের রাজকন্যা যার জন্য সে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল।

 

নাবিলাকে ফেইসবুকে এক মুহূর্ত না দেখে সে থাকতে পারতো না। শুধু একদিনের জন্য নাবিলা ফেইসবুকে আসেনি। সেই দিন তো আকাশের মনের আকাশে ভয়ঙ্কর কালো মেঘ জমেছিল যা শেষ পর্যন্ত অঝোর ধারায় আকাশের দুই চোখকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতো। নাবিলার প্রতি আকাশের আবেগ ও অনুভূতি দিনদিন বেড়ে যেতে লাগলো। নাবিলার কিছু আচরণ আকাশকে আরো বেশী ভালবাসতে বাধ্য করল। 

 

কিন্তু মেয়েদের মন বোঝা যে বড় কঠিন। তাই সে দ্বিধায় ভুগতে লাগলো । নাবিলার এই সব আচরণ কি আকাশের প্রতি তার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ? নাকি শুধু মাত্র বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ? সেই সব ব্যাপার আকাশকে খুব ভাবিয়ে তুলেছিল। অবশেষে আকাশ সিদ্ধান্ত নিল সে তার মনের সব না বলা কথা নাবিলাকে জানাবে। তার স্বপ্নের রাজকন্যাকে একদম নিজের করে নেবে।

 

সেই দিন খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো। সেই সাথে সেই দিন আকাশের মনটাও ছিল ভালো। তাই আকাশ সেই দিনই তার না বলা সব কথা নাবিলাকে ফেইসবুকে মেসেজ করে জানালো। নাবিলার উত্তরের জন্য আকাশ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলো। কবে সে তার রাজকন্যার মুখ থেকে সেই বহুল আকাংক্ষিত কথাটা শুনতে পাবে? 

 

আকাশের মনে সব না জানা কথা হানা দিতে লাগলো। অবশেষে সকালে ঘুম থেকে ওঠে ফেইসবুকে লগ ইন করা মাত্র দেখল নাবিলার মেসেজ। অধীর আগ্রহে ভয়ে ভয়ে ইনবক্স ওপেন করলো আকাশ। নাবিলার উত্তর ছিল ঠিক এই রকম – wow……..what a real life joke!! 

 

নাবিলার এই উত্তরকে আকাশ কি ভাবে নেওয়া যায় ভেবে পাচ্ছিলো না। আকাশ নাবিলাকে বিভিন্নভাবে বোঝালো যে এটা কোনো জোকস না। নাবিলা শেষ পর্যন্ত আকাশের মনের অবস্থা বোঝার পর কি করবে ভেবে পাচ্ছিলো না। অবশেষে নাবিলা সিদ্ধান্ত নিল আকাশকে সে বন্ধুত্বের প্রস্তাব দিবে।

 



 

আকাশ আবার সমস্যায় পড়ে গেলো। কি করে যে সে নাবিলাকে বোঝাবে সে তাকে অনেক অনেক বেশী ভালবাসে?? আকাশ আবার বিভিন্নভাবে চেষ্টা করতে লাগলো। নাবিলা এর পর সে ব্যাপারে আর হ্যাঁ বা না কোনটাই বললো না। 

 

আরও পড়ুনঃ

Bengali Short Stories

Shakchunnir Golpo 

Bengali Short Story

 

ফেইসবুকে মেসেজ দেওয়া-নেওয়ার মাধ্যমে এই ভাবেই আকাশ এর স্বপ্নটা একটু একটু করে বড় হতে লাগলো। দিনদিন নাবিলাকে নিয়ে আকাশের ভয়ও বেড়ে যেতে লাগলো। যদি সে তার স্বপ্নের রাজকন্যাকে হারিয়ে ফেলে। নাবিলাকে ছাড়া যে ওর জীবনটা অপূর্ণ থেকে যাবে।

 

এইদিকে নাবিলার প্রথম বর্ষের পরীক্ষা সন্নিকটে। নাবিলা ওর প্রথম বর্ষের পরীক্ষার জন্য এক মাস ফেইসবুক আর মুঠোফোন ব্যবহার বন্ধ রাখবে বলে জানালো আকাশকে। সেই কথা শুনার পর তো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো আকাশ। নাবিলার কাছ থেকে সেই বার আকাশ তার ভালোবাসার কিছুটা সাড়া পেয়েছিল। সেই একমাস আকাশ খুব কষ্টের মধ্যে কাটালো। সারাক্ষন নাবিলাকে হারানোর ভয় কাজ করতো আকাশের মনে। 

 

নাবিলার মধ্যে ওর প্রতি সামান্য অনুভূতি কাজ করছে দেখলে আকাশের মনে হতো পৃথিবীটা অনেক অনেক সুন্দর । নাবিলা একবার ফিরে তাকালে আকাশের জীবনটা অনেক সুন্দর হয়ে যেতো। কিন্তু নাবিলার সামান্য অবহেলা আকাশের দুই চোখকে কান্নার জলে ভাসিয়ে নিয়ে যেতো। আকাশের জীবনে নেমে আসতো অমানিশার অন্ধকার। সারারাত এটা-ওটা চিন্তা করেই আকাশ দীর্ঘ রাত পার করে দিতো। নাবিলার মুখ থেকে একটিবার ভালবাসি কথাটা শুনার জন্য মন ছটফট করতো। 

 

ভাবতে ভাবতে আকাশের রাত কেটে যেতো। কোনো ভাবেই দুই চোখের পাতা এক করা যেতো না আকাশের । ইতিমধ্যে নাবিলার বেশ কয়েকটা পরীক্ষা শেষ হল । পরীক্ষার মাঝখানে নাবিলা আকাশের কথা ভাবতো । আকাশ কি আমাকে সত্যি ভালবাসে নাকি অন্যকিছু ? এই রকম কিছু প্রশ্ন নাবিলার মনের মধ্যে উঁকি দেয় । সেই সব প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য নাবিলা সাহায্য নিলো আকাশের ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা নাবিলারই এক বান্ধবির । 

 

আনিকা তুই কি আমাকে একটু হেল্প করতে পারবি ? ও হে , আকাশের ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা নাবিলার সেই ফ্রেন্ড এর নাম ছিল আনিকা । নাবিলা তার মনের মধ্যে উঁকি দেওয়া প্রশ্ন গুলোর উত্তর আনিকার কাছ থেকে পেয়ে গেলো । উল্লেখ্য যে , আকাশ নাবিলাকে যে ভালবাসে সেটা আনিকা খুব ভালো ভাবেই জানতো কারণ আকাশ আনিকার সাথে নাবিলাকে ভালোলাগার অনেক কথা শেয়ার করতো । সেই সব প্রশ্নের উত্তর জানার পর নাবিলার চোখে জল এসে গেলো। নাবিলা আকাশকে মিস করতে লাগলো। সে সিদ্ধান্ত নিল পরীক্ষার পরেই সে আকাশকে তার মনের কথা জানাবে।

 



 

নাবিলা পরীক্ষা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনতে লাগলো । এইভাবে বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর আকাশ একদিন খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো । ১০৫ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে আকাশকে ভর্তি করা হলো মেডিকেলে । ওইদিকে নাবিলা তার প্রথম বর্ষের বাকী পরীক্ষা গুলোর প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত । 

 

পরীক্ষার চাপে ফেইসবুকেও আসে না নাবিলা । মুঠোফোনও বন্ধ । অনেক কষ্টে নাবিলার কলেজের এক বান্ধবির মাধ্যমে নাবিলাকে আকাশের অসুস্থ হওয়ার নিউজটা জানানো হয়েছিল । জ্বর নিয়ে মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পর ডাক্তার আকাশকে বেশ কিছু টেস্ট দিলো । আকাশের মা-বাবা তাকে নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লো । টেস্ট গুলো দেওয়ার সময় ডাক্তার খারাপ কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল । 

 

টেস্ট গুলোর রিপোর্ট হাতে আসার পর আকাশের বাবা মায়ের মাথায় পৃথিবীর আকাশটাই যেন ভেঙ্গে পড়লো। আকাশ ব্রেইন টিউমারে ভুগছিল গত এক বছর থেকে । এক বছরের মাথায় রোগটা ধরা পড়েছিল । জ্বরসহ অন্যান্য উপসর্গ গুলো এটারই বহিঃপ্রকাশ । আকাশের কি হয়েছিল সেটা আকাশকে বলা হয় নি । কারণ সেটা শুনলে আকাশ এর মানসিক আর শারীরিক অবস্থা আরো বেশী খারাপ হয়ে যেতো ।

 

তাই আকাশের যে ব্রেইন টিউমার হয়েছিল সেটা আকাশকে জানানো হল না । তবে ওর বন্ধুদের জানানো হয়েছিল খুব সতর্কতার সাথে । আকাশের রিপোর্টের কথা তার বন্ধুরা শুনে কেউ কান্না থামিয়ে রাখতে পারলো না । আকাশের নিউজটা শুনার পর পরীক্ষা শেষে নাবিলা জলদি আকাশকে দেখতে এলো । 

 

নাবিলা আকাশের সবকিছু শুনে নিজেকে খুব অপরাধী মনে করলো । ও যে মনে মনে আকাশকে অনেক বেশী ভালবেসেছিল সে কথাও যে তাকে বলা হলো না । কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো নাবিলা । সে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করলো তার জীবনের বিনিময়ে হলেও যেন আকাশের জীবন ভিক্ষা দেয় । কিন্তু নির্মম মৃত্যু আকাশকে সবার কাছ থেকে চিরদিনের জন্য কেড়ে নিলো । নাবিলা যে অনেক বেশী দেরী করে ফেলেছে সেই কথা অবশেষে সে বুঝতে পারল!

 

Bengali Story Reading Online অর্থাৎ আকাশ ও নাবিলার অসমাপ্ত ভালোবাসার গল্পটি পরে কেমন লাগলো মন্তব্য করে জানাবেন যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

Leave a Comment

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now