Bengali Short Story | বড়দের গল্প | রাজু ও মালতীর গভীর ভালোবাসা

WhatsApp Channel Follow Now
Telegram Group Follow Now

Last updated on July 4th, 2023 at 12:50 am

Rate this post

আজকে আমার লেখা Bengali Short Story (ছোট গল্প) টির নাম হরিণীর শিকার গল্পের প্রধান চরিত্রে মালতী ও রাজু, গল্পের বিষয় – আমার কোল ভরে দেও! আরও Bangla Stories এবং Valobashar Golpo পড়ার জন্য আমাদের ব্লগ টিকে সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথে থাকুন, আশাকরি গল্পটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এবং বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন।

Bengali Short Story


Bangla Short Story | বড়দের গল্প | রাজু ও মালতীর গভীর প্রেম কাহিনী

আজকের গল্প – হরিনীর শিকার


ট্রেনের জানলা দিয়ে সেদিন একটি বউকে নগ্ন হয়ে স্নান করতে দেখল রাজু।

সুঠাম চেহারার এক নারীর হলুদ শরীর বেয়ে একরাশ হিমশীতল জল গড়িয়ে পড়ছে মাটির দিকে, দেখে তাক লেগে গেল তার। ধাবমান ট্রেনের জানলা দিয়ে বিরল সেই দৃশ্যটা দ্রুত সরে গেল, যেভাবে হরিণী সরে যায় বনপাতার ভেতর। ঘাড় ঘুরিয়ে জানলা দিয়ে পেছন দিকে দৃকপাত করল সে। হ্যা, তার চোখের ভুল নয়, এক নিরাভরণ শরীরের সম্পূর্ণ এক নারী। দেখে ভয়ানক উত্তেজিত হয়ে পড়ল রাজু।
সময়টা মধ্য দুপুর। ডাউন কাটোয়া-ব্যান্ডেল লাইনের দুপুরের ট্রেন মানেই গয়ংগচ্ছ মনােভাব। একে সিঙ্গল লাইন তার ওপর ডবল লাইনের কাজ চলছে। বেলা বারােটার পর থেকে যে সব ট্রেন ব্যান্ডেল বা হাওড়ার দিকে যাত্রা শুরু করে, আপ ট্রেনদের জায়গা ছাড়তে ছাড়তে এক ঘণ্টার পথ পেরােতে সে সময় নেয় দেড় ঘণ্টা, এমনকি দুই ঘন্টাও। 
দুপুরের এই ট্রেনেই কলকাতা যায় রাজু। হপ্তায় একদিন। খুব চাপ থাকলে সে হপ্তায় দুই দিন যায়। ধাত্রীগ্রামে দোকান আছে রাজুর। কাপড়ের দোকান। ধাত্রীগ্রাম, কালনা, সমুদ্রগড় এলাকায় তাঁতের কাজ খুবই প্রসিদ্ধ। সে তাঁতিদের দিয়ে শাড়ি করায় কেবলমাত্র নিজের দোকানের জন্য নয়। বড়বাজারে কয়েকটি দোকান ধরা আছে তার, তাদের প্রয়ােজন মত মাল সাপ্লাই দেয়। আর সেখান থেকে নিয়ে আসে সিন্থেটিক শাড়ি-কাপড়, বাংলাদেশের শাড়ি। এবার পুজোর বাজারে বাংলাদেশের শাড়ির কদর খুব। ডিজাইন ভাল, তেমনি দামও কম। তাঁতিরা তাে বলাবলি করছে বিদেশি শাড়িই এবার তাদের ভাত মারবে। পরের হপ্তায় রাজু জানলার ধারে সিট নিয়ে বসে রইল। বেহুলা পেরােলে সে হাঁ করে চেয়ে রইল বাইরে! কিন্তু না! সে তেমন কিছুই দেখল না। ট্রেন যখন হু হু করে বেরিয়ে যাচ্ছে, নির্দিষ্ট সেই জায়গাটা আসতে সে মহা উত্তেজিত হয়ে পড়ল। 
দেখল একটি বালতি, ভিজে মাটি আর ছায়া পড়ে আছে। আর কিছুই চোখে পড়ল না। তবে কি সে ঠিক দেখেনি? কিন্তু তাই বা কী করে হবে? সেদিন সে স্পষ্ট দেখেছে এক মহিলার নিরাভরণ দেহ। সামনে রাখা বালতি থেকে প্লাস্টিকের মগে জল তুলে নিয়ে উপুড় করে দিচ্ছে নিজের শরীরে। হলুদ পিঠ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে! একদিন রাজু করল কী, ঝুপ করে নেমে পড়ল সােমড়াবাজার স্টেশনে। এখন তাকে লাইন ধরে পায়ে হেঁটে পিছিয়ে যেতে হবে অনেকটা। সব লােক যে যার মত গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে রাজুও পায়ে পায়ে হাঁটা লাগাল। বড়বাজারের মাড়ােয়ারির গুদামে ফোন করে দেবে শরীর খারাপ বলে। দরকারে না হয় কাল যাবে। এখন রহস্যটা দেখা
যাক না! ট্রেনলাইন শেষ করে পায়ে চলা সরু একটা পথ পেল রাজু। গাছপালার ফাক দিয়ে পথটা নেমে গেছে নীচের দিকে। সেটা দিয়েই নেমে যেতে থাকল রাজু। 
সামনে একটা পাড়া, আবার যদি বলা যায় গ্রাম তাে গ্রাম। বাংলাদেশ থেকে উৎখাত হয়ে আসা মানুষের বাস। দরমার ঘর, মাথায় টালি। একটু ফাঁকা জায়গা পেয়ে বসিয়েছে ফল-মূল, শাক-সবজির গাছ। এমন একটি বাড়িতেই সেই মহিলা থাকে। যে বাড়ির পিছনে আছে এক কুয়ােতলা। সেই পাড়ার ভেতর ইতস্তত পা ফেলছে, আচমকা এক বাড়ির ভেতর থেকে আহ্ববান এল, এই যে ছেলে, একটু ইদিক পানে আসাে দিকিনি। হঠাৎ ডাকায় সে চমকে গিয়েছিল। তাকিয়ে দেখল এক বিধবা বুড়ি। সেই তিন বাড়ির একটিতে বসে আছে। পাটকাঠি দেওয়া বেড়া। তার ভেতর থেকে বুড়িটি তাকে ডাকছে। পায়ে পায়ে বাড়ির ভেতর ঢুকল রাজু। বুড়ি হাঁক দিল, “ও বউমা, নাওয়া হয়ে গেছে তুমার? আর কতক্ষণ ধরে ও দেহে জল ঢালবে! পােয়াতি মানুষ, ঠাণ্ডা লেগে যাবে যে। ইদিকে আসাে, স্বপনের বন্ধু নিরঞ্জন আইছে, তারে নিয়ে যাও। বুড়ি আবার রাজুর দিকে ফিরে বলল, তুমি যে দেরি করে ফেললে বাবা!’ 
খুক করে কাশল রাজু। বুড়ি বলে চলে, ‘স্বপন এই তাে সিদিন চিন্নাই চলে গেল। ও যে হােটেলে রাঁধে, মালিক আর ছুটি দিলে না। ও বলে গেছে মা, আমার এক বন্ধু আসবে, তােমার বউমাকে ডাক্তার দেখিয়ে নিও। তুমি এসেছ আর কোনও ভয় নাই আমাদের। নইলে আমি এই বুড়ি মাগী অমন সােমত্ত বউকে নিয়ে কোথা ছুটো ছুটি করব বলতে পার!
স্বপনই বা কদ্দিন আর ঘরে বসে থাকবে।
রাজু বাড়িটাকে দেখছিল। দুটি দরমার ঘর। চারিদিকে হরেক গাছ থাকায় বাড়ির ভেতর বেশ ছায়া ছায়া ভাব। সেই ছায়ায় শালিখেরা ঝিমােয়। হালকা বাতাস আছে। রাজুরা যে খুব পয়সাওলা তা নয়। একসময় ওর বাড়ির লােক ওপার থেকে এসে এমনই কষ্ট করেছে। এখন সে তার বাবার ব্যবসা ধরে নিয়েছে। ব্যবসা ছড়াচ্ছে চারিদিকে। দোকানে দুটি ছেলে রেখেছে। এই যে সে কলকাতায় যাচ্ছে, সেই ছেলে দুটিই দোকান সামলায়।
আরও পড়ুনঃ গল্পঃ অমর প্রেম
বুড়ি আপন মনে বকেই চলে, তা আমি স্বপনকে বললুম, তুই যে চলে যাবি, আমরা একলা দুটি অবলা মেয়েমানুষ, কী করে সব সামলাব। সে তখন বললে তােমার কথা। রাজু বুঝতে পারছিল এক ফাদে সে জড়িয়ে পড়ছে। এসেছিল সাময়িক মােহ চরিতার্থ করতে, যৌবনের টানে যৌন উত্তেজনায় চালিত হয়ে। এখানে এসে কোন এক ভুলবশত তার নিজের নাম, হয়ে উঠছে এক অচেনা-অজানা চরিত্র। বুড়ি তার মুখের ওপর ঝুঁকে পড়ে নীচু গলায় বলল, “কেবলি রাধামাধবকে ডেকে গেছি, প্রভু আমার বংশ রক্ষা কর। এ্যাদ্দিনে প্রভু মুখ তুলে চাইলে। এ মাসে বউমা স্নান করেনি গাে।
ঘর থেকে এক মহিলা বের হল। তার পায়ে হরিণীর ছন্দ। এই কি আবরণহীন স্নান সারে? 
এখন তাকে দেখে বােঝার কোনও উপায় নেই। একটা সস্তা দরের ছাপা শাড়ি পরে আছে। সঙ্গে ম্যাচিং ব্লাউজ। নাভি, পেট, উন্নত বক্ষ দেখে লােম খাড়া হয়ে উঠল রাজুর। 
বুকের ভেতরটা গুড়গুড় করে ডেকে উঠল। সে কি এখন থেকে যাবে, নাকি একলাফে বেরিয়ে যাবে বাড়ি থেকে। যদি জানতে পারে সে নিরঞ্জন নয়, অনর রাজুর ভেতর গুড়গুড়ানি ভাবটা সমান ভাবে রয়ে গেছে, বাড়ছে-কমছে।
তবু সে পালাবার ফাঁক খুঁজছে না। মনে হচ্ছে আর একটু, আর একটু। দেখাই যাক না কী হয়। এক অজানা মানুষের খাপে সে এঁটে যাচ্ছে, মনকে সম্পৃক্ত করে ফেলছে, যা সে ভেবে আসছে সেটাকেই মেনে নিল এখন পাকাপাকিভাবে! হ্যা, এখন সে নিরঞ্জন। মনে মনে এই নতুন নাম আবার সে ঘনঘন আওড়াতে থাকল, নিরঞ্জন, নিরন। ওঃ কী সুন্দর একটা নাম!
বুড়ি সমানে বলে চলেছে, যাও বাবা, ভিতরি যাও। ও বউমা, নিরুকে এটু নেবুর জল করে দিও।
মহিলার দিকে এগিয়ে গেলে সে বলল, “রাস্তা চিনতে কি অসুবিধে হল?
না, লাইন ধরে সােজা হেঁটে চলে এলাম।
‘ঘরে বসুন, লেবুজল করে দি’!
রাজু না করল না। এই গরমে লেবুজল মন্দ কী। তবে সে বুঝতে পারছিল, মনের ভেতর যে অচেনা স্রোতটা বইছিল তিরতির করে, সেটার বেগ কমে আসছে একটু একটু করে। ইতিমধ্যে সে জেনে ফেলেছে এরা কেউই নিরঞ্জনকে দেখেনি। কেবল নাম শুনেছে। তাই যে কোনও বিপদ থেকে সে এখন মুক্ত। তবে ভাবনার বিষয় যেটা, তাকে এখন কী করতে হবে?
লেবু জলের গ্লাস বিনিময়ের সময় হাতে হাতে ঠেকাঠেকি-ছোঁয়াছুঁয়ি-দেখাদেখি হল। পুরােনাে সেই শিরশিরানি ভাবটা যেন আবার জেগে উঠল রাজুর ভেতর। মহিলা বলল “আমার নাম মালতী। আপনি নাম ধরেই ডাকবেন। এখন আমায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
লেবুজল শেষ হয়ে গেছিল রাজুর। বলল, ‘এদিকের তাে আমি কিছুই চিনি না। ‘মালতী এমন এক কটাক্ষ হানল যে রাজু ফ্রিজ হয়ে গেল। 
খুলে রাখা চুল কিছুটা শুকিয়ে আসায় দুই হাত পিছনে নিয়ে গিয়ে মালতি হাতখোঁপা করতে  থাকল। ভরন্ত বুকদুটি এগিয়ে এল রাজুর মুখের সামনে। স্তনের হালকা এক মিষ্টি গন্ধ পেল সে। শরীরের সেই শিরশিরে ভাবটা গােটা দেহে এমনভাবে চারিয়ে গেছে যে মনটাকে অবশ করে ফেলল। তার মনে পড়ল সে নিরঞ্জন নয়।
সাইকেলটা ছিল চালার ভেতর। সেটাকে বার করল রাজু। বুড়ি কাপা কাপা গলায় বলল “সাবধানে চালাবে বাবা-‘বলে দুই হাত জোড় করে মাথায় ঠেকাল, ‘দুগ্গা, দুগ্গা…’
একটু এগােলেই মাঠ। দুই দিকে সবুজ ধান গাছ। মাটির রাস্তা, রােদ আছে বটে, তবে সেটা লাগছে পিছনে। কেরিয়ারে বসে আছে মালতী। ফাকা রাস্তায় দুই নরম স্তন চেপে ধরল রাজুর পিঠে। আপনি ছেড়ে সে বলল, তুমি বিয়ে করেছ?
‘না?
‘মেয়ে পাচ্ছি না।
‘আমি যদি মেয়ে দেখে দিই?
‘দিও।”
‘কেমন মেয়ে পছন্দ তােমার ?
‘সাহস করে রাজু বলে, তােমার মত।
শুনে হা হা করে হাসল মালতী। বলল “কেন গাে। 
আরও পড়ুনঃ গল্পঃ ভালোবাসার বিপদ
আমার কী এমন দেখলে?
‘সত্যি বলব?
‘এতক্ষণ তবে মিথ্যে বলছিলে নাকি?
“না না তা নয়। সাহস পাচ্ছি না।
‘সাহস দিচ্ছি। বলে ফেল—’সে রাজুর কোমর জড়িয়ে ধরে। রাজু বুঝতে পারে না ব্যাপারটা কী হচ্ছে। স্তনের চাপকে সে ভেবেছিল এমনিই। নড়েচড়ে বসতে গিয়ে চেপে বসে গেছে তার পিঠে। পায়রার মত নরম স্তনের উত্তাপ এতই যে সারা শরীরের সেই উত্তাপ ছড়িয়ে যাচ্ছিল। এখন সে কোমর জড়িয়ে রাজু বুঝল এই নারী তাকে কামনা করছে। এমন ভরা নারীর মত ভরা দুপুর। এসময় যদি নারী কামনায় কাহিল হয়ে পড়ে, কামনার মাঝে যদি কোনও পুরুষ সে পায়, তাকে নিয়ে দেহ সুখে ভেসে যেতে চায়। মাঠ পেরিয়ে জঙ্গল শুরু হয়েছে। নারী কি বােঝে না এমন করে কোনও পুরুষকে স্বর্গের স্বাদ দিতে নেই। তাতে পুরুষ যে কীরকম উতলা হয়, সেটাও কি জানা নেই?
‘কী হল বললে না?
বলে মালতী রাজুর জামার তলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দেয়। রাজুর হাত টলমল করে। কোকিল ডাকছে, অন্যান্য পাখিও থেমে নেই। প্রজাপতি, কীটপতঙ্গ উড়ছে। এ সময় নারী কেন যে পুরুষকে এমনি করে দেহস্বাদ দেয়। নিরঞ্জন নামক পুরুষের সঙ্গে কি তবে স্বপ্নে মিলনখেলা খেলে? স্বপ্নকে সে বাস্তবে টেনে আনতে চায়?
বলেই ফেলে রাজু, ‘তােমার বুকে স্বর্ণচাপার গন্ধ’! শুনে লজ্জা পায় মালতী।
স্থলিত স্বরে বলে, এমনি করে আমার শরীরের কথা কেউ কখনও বলেনি।
তােমার স্বামী’?
“সে কি মানুষ ? লিঙ্গধারী পুরুষ কেবল।
“আর কেউ?
‘আর কে বলবে? তেরাে বছর বয়সে বিয়ে হয়েছে। শরীর বলে কিছু কি ছিল তখন? শরীর হল সতেরাের পর। এখন কুড়ি। এই বয়সে কি ফুলের গন্ধ চাপা দেওয়া যায় ?
‘চাপা দেবার দরকারই বা কী?”
মালতীর গাল লাল হল। বলল, ‘সে গন্ধ নিয়ে তুমি করবে টা কী শুনি?
‘যদি বলি শরীরে মাখব?’
“তারপর?
‘লােকে টেরিয়ে তাকাবে। গন্ধে তারা অবাক হবে। বলবে কী মেখেছ?
‘তখন তুমি কী বলবে?
‘তাদের বলব এ হল কস্তুরী মৃগের গন্ধ।
‘যাঃ! আমি কি হরিণী নাকি?”
‘হরিণী-ই তাে। একদিন দেখলাম স্নান করছ, পরদিন নেই। এদিকে গন্ধে আমি বাঁচি নে। কী করব, কোথা যাব, কোন কিছুরই কূল-কিনারা করে উঠতে পারিনে। তাই যা আছে কপালে বলে নেমে পড়ি। রাখলে তুমিই রাখবে, মারলে তুমিই—এই ভেবেই আসা। কখন কোথেকে যে উদয় হও, কে বলতে পারে তুমি ছাড়া ? 
হরিণী ছাড়া তুমি আর কী?
মালতী হাত বুলিয়েই চলে রাজুর সারা শরীরে। একসময় নাভির নীচে হাত পৌঁছে যায়। কেঁপে ওঠে রাজু। মালতী ঘন ঘন শ্বাস নেয়। ফিসফিস করে বলে, এমনি কর কেন গাে? 
একটা যুবতী মেয়েমানুষকে ঠিক করে ধরে রাখতে পার না। হাত টললে পড়ে যাব যে!”
রাজু থেমে যায়। মালতী সাইকেল থেকে নেমে বলে, ‘আঃ, কী সুন্দর না? দারুণ সব গাছপালা। 
গা শীতল হয়ে যায়। ভেতরের ওই বড় গাছের নীচে চল যাই।
 
কেমন ছায়া ছায়া না?
আপত্তি করল না রাজু। সে যে নিরঞ্জন। যেন যৌন নিয়তি তাড়িত এক মানুষ।
নিয়তি তাকে যেমন চালনা করবে তেমনই চলতে হবে। সে একটু আশ্রয় চাইছিল, তাই ওই ছায়াই তার দরকার। মালতী যা করে এসেছে এতক্ষণ ধরে, তার শরীরে কাঁপন ধরে গেছে।
‘এখানে আমার একটা ব্রত পালন করার কথা। তার জন্য একজন পুরুষ চাই।’
রাজু কিছু বুঝতে পারল না। বলল ‘ডাক্তার দেখাবে না? ‘ডাক্তার দেখিয়ে কী হবে। 
আমার পেটে বাচ্চা নেই।
এ মাসে তুমি স্নান করনি।
তার কথা কেড়ে নিয়ে মালতী বলল ওটা মিথ্যে। মাসিক নিয়ম মেনে হয়েছিল, কিন্তু শাশুড়িকে বুঝতে দিইনি। কারণ আমি জানতাম নিরঞ্জন আসবে। মরিয়া হয়ে রাজু বলে, কিন্তু আমি তাে নিরঞ্জন নই।”
‘আমি তাে বলিনি যে তুমি নিরঞ্জন নও।
‘আমি তােমাকে সত্যিটা জানিয়ে দিচ্ছি।
‘সত্যি-মিথ্যে বুঝি না। যে পথে তুমি এসেছ, তা ঈশ্বরের পথ।
‘আমার কেমন সব গুলিয়ে যাচ্ছে। 
দিশেহারা হয়ে রাজু বলল।
‘তিনি ব্রতধারী নারীর মাথায় হাত রাখলে নারী গর্ভবতী হয়।
‘তােমার স্বামী জানলে?
‘জানবে না। ওর শরীরে দোষ আছে, আমার নেই। ডাক্তার অনেক দেখিয়েছি, আমার কোনও খুঁত নেই। ডাক্তার বলেছিল স্বামীর চিকিৎসার দরকার। ওর বীর্য পরীক্ষা করাতে। তা শুনে শাশুড়ি গাল দিয়ে আমার বংশ উদ্ধার করে দিল। আমি নাকি এক বাঁজা মহিলা। স্বামী মেরেছিল। বলে, আমার দোষ দিলি তুই? দেখবি আমার লিঙ্গের তেজ কত? এই দ্যাখ… দ্যাখ… দ্যাখ… ওঃ। 
মালতী থামল। দম নিয়ে আবার বলতে লাগল, এবারে একমাস ছিল। প্রতিদিন মিলন করেছে। যাবার আগে বলে গেছে, এবার যদি বাচ্চা না আসে আমায় বাপের বাড়ি দিয়ে আসবে। আবার বিয়ে করবে। আমার বাপ-মা গরিব। তারা নিজেরাই খেতে পায় না, আমায় কী খাওয়াবে? এদিকে মা-বেটার বংশধর চাই। তাই এক ফন্দি বের করি। নগ্ন-স্নানব্রত। জানতাম কেউ না কেউ ট্রেন থেকে দেখবে, সে নেমে আসবে আমার কাছে। আমার ব্রত উদ্যাপন হবে। সে আমার ঈশ্বর, তার নাম নিরঞ্জন।
রাজু দম চেপে বসে রইল। গাছের পাতা, পাখি, পতঙ্গের দল যেন তার দিকে তাকিয়ে স্থির। যেন তারা বলছে, তুমি ঈশ্বর হয়ে ওঠো রাজু। এমন সুযােগ সকলের ভাগ্যে আসে না। আপনা মাংসে হরিণা বৈরী নয়, আপনা মাংস তার মিত্র! 
আমাদের সাথী এই হরিণী নিলয় জানে। তাকে তুমি রক্ষা কর।
দিশেহারা রাজু জানে সময় বহিয়া যায়…
‘তুমি কি চাও, আমি আত্মহত্যা করি?
‘না’। রাজু ছিটকে উঠল।
“তবে এস। আমার কোল ভরে দাও স্বর্গের আলােয়।
রাজু ঘামছিল। চোখ-মুখ লাল হয়ে উঠেছিল। 
তখন নিজেকে উন্মুক্ত করতে থাকল নারী। 
পদ্মের কোরকের মত সাদা স্তন ঝিরিঝিরি বাতাসে আর হলুদ আলােয় একটু একটু করে ফুটে উঠতে থাকে; বেলকুঁড়ি সদৃশ নাভির অভ্যন্তরে আলগা অন্ধকার।
আরও পড়ুনঃ গল্পঃ ভালোবাসা বিভ্রাট
সেখান থেকে মদির এক গন্ধ উঠে আসে। রাজু বিবশ হতে থাকে। দেখে, টলটলে ঝিলে যেমন নরম শালুক ফুটে থাকে উন্মুখ হয়ে, তেমনি ক্রমশ অধীর হয়ে উঠছে মালতী। টলে যেতে যেতে রাজু বুঝল, হা, এ দেহই সে ট্রেন থেকে প্রত্যক্ষ করেছে।
এ দেহ কেবল কাছ থেকে দেখার জন্য, হয়ত একটু ছোঁবার জন্যই তার এখানে আসা।
কোমরের সেই ভাঁজ, পিছন থেকে দেখা স্তনের আবছা আভাস, চুলের ঢেউ। হরিণীর মত চকিতে লুকিয়ে ছিল বনমাঝে। এখানে সে নিজেকে লুকাতে আসেনি, সে যে নিলয় জানে তা প্রমাণ করতে এসেছে। মৃদু স্বরে বলল, কীগাে পুরুষ কস্তুরীর গন্ধ মাখবে না?
রাজুর মনে হল পৃথিবীতে কোথাও কিছু নেই, কেবল সে আর এক হরিণী রয়ে গেছে। হরিণীর গায়ের কোমল শােভা যেন বনভূমি আলাে করে রেখেছে, গাছেরা ডালপালা ঝুকিয়ে অন্যান্য আকাশস্থিত দেবতাদের সৃষ্টি থেকে এই নগ্নতা রক্ষা করছে। সমগ্র আকাশ-বাতাস-চরাচর এক পরিপূর্ণ নারী শরীরের কামনার গন্ধে ভরে যাচ্ছে ক্রমশ। গন্ধটা চেনে রাজু। ধাবমান ট্রেনের ভিতর এই গন্ধ তাকে আহ্বান করেছে।
মালতী তীব্র আলিঙ্গন করল তাকে। 
কস্তুরী-নাভিতে চেপে ধরল রাজুর মুখ। 
রাজুও নিজেকে আর সামলে রাখতে পারল না।
সে মালতির কস্তুরী-নাভির গন্ধ মন প্রাণ ভরে নিতে লাগলো। দুজনে ক্রমশ ঘন ঘন নিঃস্বাস নিতে লাগলো। অবশেষে রাজু স্বর্গের আলোয় মালতীর কোল ভোরে দিল। দিনের শেষে যেমন নিয়ম মেনে সূর্যাস্ত হয় তেমনি তেমনি রাজুও মালতীর থেকে বিদায় নিল।
এখন ডবল লাইন তৈরী। অবশ্য কাটোয়া অবধি নয়। ব্যান্ডেল থেকে কালনা পর্যন্ত। তাই ক্রসিং-এর ঝামেলা নেই। ট্রেন হুহু দৌড়ায়। এখনও দুপুরের ট্রেনে কলকাতা যায় রাজু। বেহুলা পেরুলেই সে সতর্ক হয়ে ওঠে। জানলায় মুখ সাঁটিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকে। এক পুরাতন ভিজে কুয়ােতলা ঘিরে নানা ফল-ফুলের গাছ।
তার ফাক দিয়ে দৃষ্টি চালিয়ে সে খুঁজে নিতে চায় একটা জলভরা বালতি। এক মা স্নান করিয়ে দিচ্ছে এক ছােট্ট নগ্ন শিশুকে। সেই শিশুর গায়ে ঈশ্বরের গন্ধ।
@ 👉 Bengali Short Story গল্পটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার এবং কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না…..

Leave a Comment

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now