Bengali Short Love Story Text | জল পরী – কাল্পনিক প্রেম

WhatsApp Channel Follow Now
Telegram Group Follow Now

Last updated on July 4th, 2023 at 12:50 am

Rate this post

আজকের Bengali short love story টির নাম – “জল পরী” গল্পের প্রধান চরিত্রে শম্পা, বিষয় – অসম্পূর্ণ ভালোবাসা, Bengali love stories এবং Premer golpo অথবা Jokes in bengali আরও পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগ টিকে সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথে থাকুন, গল্পটি পড়িয়া যদি আপনার ভালো লাগিয়া থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এবং শেয়ার করিতে ভুলিবেন না।


Bengali short love story


Romantic Short Love Story in Bengali – ছোট একটি রোমান্টিক প্রেমের গল্প

আজকের গল্প – জল পরী 


Love – বিশেষ করে নরনারীর চিরন্তন প্রেম যে কি আশ্চর্য জিনিস এ কে না জানে। প্রেম নিয়েই বােধহয় পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ সাহিত্য রচিত হয়েছে। প্রেমের বৈচিত্র্যও তাে কম নয়। প্রেম, মিলন, বিরহ, পরকীয়া, হিংস্র বা আদিম, দেহগন্ধময়, প্লেটোনিক। দান্তে এক বিয়েবাড়িতে এক কিশােরীকে কয়েক পলক দেখে যে ফিদা হয়ে গিয়েছিলেন সেই কিশােরীর সঙ্গে তাঁর আর দেখা হয়নি, তার নাম বা পরিচয় ও জানতেন না, তবু তাকে নিয়েই Divine comedy রচনা করে ফেলেছিলেন, যা আজও কালজয়ী হয়ে বেঁচে আছে। বেঁচে আছে কালজয়ী বিয়াত্রিচেও। শরৎবাবুর devdas একরকম, আবার তারই দত্তা অন্যরকম। প্রেমের বৈচিত্র্যই তাকে এমন মহার্ঘ করে তুলেছে। এইসব নানারকম সেরা প্রেমের গল্প দিয়ে আমাদের ব্লগ টি সাজানো আছে।




 


নাঃ শম্পাকে আমি পাইনি। চাওয়া-পাওয়া এ-সব আমার কাছে অসহ্য শব্দ; কিন্তু আজ ঐ সব শব্দেই নিজেকে প্রকাশ করতে হল। সত্য হয়তাে এরকমই, যা সবাইকে তার মিনার থেকে নামিয়ে আনে সমতলে, এনে এক করে দ্যায় সবাইকে কিছুতেই আলাদা হতে দ্যায় না। সম্ভবত, চাওয়া-পাওয়া এ-সব শব্দে শুধু নয়, এ-সব শব্দের তাৎপর্যও আমি বিশ্বাস করতাম না; কিন্তু আজ যেমন এ-সব শব্দও আমাকে ব্যবহার করতে হচ্ছে, তেমনি এ-সব শব্দের তাৎপর্যও আজ আমার কাছে একেবারে নিরর্থক নয়। শম্পার সঙ্গে আমার চেনা বছর কয়েক আগে, দিন কয়েক তার সঙ্গে আলাপ-পরিচয় মাত্র। কিন্তু তার মধ্যেই শম্পা সে আমার প্রথম প্রেম, এবং হয়তাে শেষও।
 
আমি আমার পরিচিতদের মতন যদি বারবার ভালােবাসতে পারতাম গভীরতম ভালাে-না-বেসে, তাহলে বােধহয় বেঁচে যেতাম। কিন্তু ঈশ্বর কারাে-কারাে ললাট-লিখন অন্যরকম করেন বলেই তাে যুগে যুগে নতুন গল্প লেখা হয়। এক গল্প নতুন করে লেখা হয় আবার। তার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা কোনাে এক বিয়ের মজলিসে, রাতে। আলােয় হাসিতে লােকজনে শামিয়ানায় কলরবে বেলুনে পােশাকে জ্বলজ্বল করছিল সেই সন্ধ্যা, সেই বাড়ি- স্বপ্নের সন্ধ্যা, স্বপ্নের বাড়ি। সেখানেই আমার দুটি চোখ আবিষ্কার করে নিয়েছিল অন্য দুটি চোখকে, যে-চোখগুলাে এত বড়াে-বড়াে এতাে অনির্বচনীয় যেন তার ভিতরে অনায়াসে ঘুমােনা যায় দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী ভরে।

আর আমি, আমিও বােধ হয় আবিষ্কৃত হলাম অন্য দুটি চোখের আলােয়, চোখের ঝিনুকের ভিতরকার আশ্চর্য মুক্তোর মতন। জানলাম নিজের শরীর, নিজের মন। বিয়েবাড়ির সেই সাজানাে দরােজা, লাল শামিয়ানা, গাছের ভিতরে ভিতরে লাল নীল সবুজ ফলের মতন বাল্ব; সবুজ কুঞ্জ, এক একটি টেবিল ঘিরে মৌমাছির মতন কয়েকজনের গল্পলােক ও হাস্যদ্যুতি যেন একটা পটভূমির মতন মনে হতে লাগল। বিবাহের ঐ পটভূমিতেই লেখা হয়ে গেল আর একটি মিলনের সু-সমাচার। সেদিনই পরিচয়। সেই পরিচয়ের পটভূমিকায় জ্বলজ্বল করতে লাগল রাত্রি। 

একটি চাউনি বুকের ভিতর বহুদূর খুঁড়ে বসে গেল, একটি কটাক্ষে যেন দুলে উঠল বুকের ভিতরের সাত সাগরের জল, ছিন্ন দু-একটি কথার টুকরাে ঝরে পড়ল আশ্বিনের বৃষ্টির মতন। আর সব আমাকে ঘিরে, আমাদের দুজনকে ঘিরে। ক্রমশ মনে হতে লাগলাে সেই ভিড়ের ভিতরে শুধু দু’জন জেগে আছে, আর সবাই চারপাশে থেকেও যেন বহুদূরে চলে গেছে। তারপর দুদিনের মধ্যেই দেখা হল আবার। পরিচয় থেকে আলাপ। শম্পা আমার হৃদয়ে দাঁড়িয়ে হাসতে লাগল, আমি তার চোখের ভিতরে পালাতে চাইলাম- যে চোখ ধরে ফেলেছে আমাকে। আমার ভালাে লাগতে লাগল; ধরা পড়েও আমি খুশি হলাম; যে ধরে সে শুধু ধরেই না, সে-ও খানিকটা ধরা দ্যায় এই সত্য আমি জানলাম, কিন্তু এ জানা জ্ঞানের মতন এল না, এল আনন্দের পােশাক পরে। আমার ধূসর দিন ঝলসে উঠলাে উজ্জ্বলতায়। 




সেই হৃদয়বিদারী চাউনি, সাগর-দোলানাে কটাক্ষ হাসি- যা তীরের মতন ভেদ করে যায়, আর আশ্বিনের পশলা বৃষ্টির মতন কথা। হৃদয় থেকে ঐ দিগন্ত পর্যন্ত একটি দীঘল বাঁশি বেজে উঠল। এ এক আশ্চর্য আনন্দ, যা আমার রাত্রিকে নিঘুম করে দিলাে। এ কোন্ আনন্দ, যা আমাকে কাঁদালাে। আমি কাঁদলাম, কেন কাঁদলাম জানি। কেঁদে কেঁদে আমি সুখী হলাম। পৃথিবীতে এসে অজস্র দুঃখের ধারার মধ্যে কয়েকটি মুহূর্ত জয়ী হয়ে রইল আনন্দে, একটি অক্ষয় শিশিতে ভরে থাকা অফুরাণ সৌরভ চিরকালের সম্পদ হয়ে রইল আমার।। এরকম কিছুদিন গেল, শম্পার সঙ্গে আমার চেনাজানার কয়েকটি দিন মাত্র। 

এখানে একটি কথা বলে রাখা ভালাে শম্পার সঙ্গে আমার যে চেনাজানা তা কোনােদিনই খুব বাস্তবতার পর্যায়ে নেমে আসেনি, বইয়ে যেমন পড়া যায় তেমনিভাবে আমরা কোনােদিনই একে অপরের কাছে প্রকাশিত হইনি, কিন্তু গােপন ছিলাম না। আমার আচরণে তার প্রতি আমার মনােভাব হয়তাে একটু স্পষ্টভাবেই প্রকাশ পেত। কিন্তু শম্পার ব্যবহারে লুকোনাে কিছু না-থাকলেও কোথায় যেন একটা আড়াল থাকত, সে নিজেকে কিছুতেই আবেগে ভাসিয়ে দিত না। 

কোথায় একটা শাসন থাকত তার কিন্তু ‘শাসন’ শব্দটি এখানে যথাযথ প্রযােজ্য হচ্ছে না, তার ব্যবহারে এমন একটি সহজতা ছিল যেখানে শাসন-কথাটি সুপ্রয়ােগ নয়, অথচ দূরত্ব ছিল। মাঝে-মাঝে তাকে অত্যন্ত কাছের মনে হত, সম্পূর্ণ পরিচিত; মাঝে একেবারে আমার অচেনা একটি মেয়ে বলে তাকে মনে হত। আসলে আমি নিজেকে নিয়ে এ-রকম ব্যস্ত ছিলাম যে এসব ব্যাপার তলিয়ে ভেবেই দেখিনি। ভেবে দেখিনি ততদিন, যতদিন আমি একটি বিস্মিত আঘাতের সম্মুখীন হইনি। হঠাৎ একদিন শুনলাম শম্পার বিয়ে। 

আরও পড়ুনঃ গল্পঃ লজ্জাহর 

উজ্জ্বলতা যেন মুহূর্তের পিঙ্গল ধূসরতায় পর্যবসিত হয়ে গেল, যেন এক ফুয়ে কেউ নিভিয়ে দিল ঝাড়লণ্ঠনের সবগুলি আলাে। শরীরে ছুরি বিধলে যে-যাতনা হয়, এ তার চেয়ে শততম তীব্র। প্রথমে মনে হল, শম্পা আমাকে ঠকিয়েছে। পরে মনে হল কই, শম্পার সঙ্গে তাে এ-রকম কোনাে শর্ত হয়নি যে সে আমাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবে না। এমনকি আমাদের ভালােবাসা কোনােদিন উচ্চারিত হয়নি। আমার তরফ থেকে তাে বলা বাহুল্য, কিন্তু শম্পা কি আমাকে সত্যিকার ভালােবেসেছে? ভালাে লাগা আর ভালােবাসা কি এক? তাহলে কি আমি ভুল করলাম?
কিন্তু নিজেকে ঠিক মুখের স্বর্গের অধিবাসী বলে মনে হচ্ছিল না আমার। 

এখন নিজেকে অনেক নিরাসক্তভাবে দেখতে পারি, আবেগের বাইরে গিয়ে, তাতেও শম্পার হাসি-চাউনি কথার ভিতর থেকে এক গােপন মধুর অর্থ বেরিয়ে আসতে থাকে কেবলি । কিন্তু এখন আর মধুর কি? সব মাধুর্য এখন তিক্ততায় পরিবর্তিত হয়ে গেছে। নাঃ, দিনে দিনে আমি বুঝতে পারলাম মাধুরীর কিছু অবলেশ রয়ে গেছে তবু। আমি দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলাম অন্ধকার থেকে হঠাৎ তীব্র আলাে সামনে এনে ফেললে যেমন হয়- আমার চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমি আলাে বলছি কাকে, আর অন্ধকারই-বা কাকে; কোনটা যে আলাে আর কোনটা যে অন্ধকার তা কে নির্ণয় করবে। অন্তত আমি নির্ণয় করতে পারলাম না। শম্পার সঙ্গে ফের দেখা হল। 




সে ঠিক আগের মতন আছে ? সেই মােহিনী হাসি, মােহিনী কটাক্ষ, মােহিনী কথা। আমি সব গুলিয়ে ফেললাম, আমার সব বানিয়ে রাখা কথা এলােমেলাে হয়ে গেল। কিন্তু খুব ভিতরে আমি খুশি হয়ে উঠলাম শম্পা বদলায়নি বলে। আমার মন বলল শম্পা যেন চিরদিন এমনই থাকে। আমার কাছে শম্পা চিরদিন এক রইলাে এই খুশি আমাকে আলােকিত করে তুলল আবার, শম্পাকে সরাসরি কোনাে কথা জিজ্ঞেস করা হল না আমার। পরে এই নিয়ে মনে কোনােদিন অনুতাপ উপস্থিত হলে যেন শম্পার ভিতর দিয়ে আমি বুঝতে পারতাম; শম্পার কাছ থেকে এর সরাসরি উত্তর আমি কোনােদিনই পাবো না। আরাে পরে আমার ভয় করতে লাগল শম্পাকে কোনাে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে, যদি একটি মারাত্মক উক্তি শুনতে হয় হৃদয়বিদারক উত্তর, তার চেয়ে ঐ প্রশ্নটি রহস্যই হয়ে থাক, ওর রহস্য-মাধুরী কোনােদিন ফুরােবে না।

শম্পাকে ঐ প্রশ্ন আর কোনােদিন করা হয়নি, করার কথাও মনে হয়নি আর। শম্পার বিয়ের পরে একদিন ওর নতুন বাড়িতে গেলাম ওর মানে ওর স্বামীর, ওদের। লেকের ধারে সুন্দর নির্জন একতলা ছােটো বাড়ি। শান্ত জলে ছায়া ফেলে আছে। সেদিন বিকেলটাও ছিল মনােরম। আমার মনে কোনাে কাটা ছিল না। আমি শান্ত স্বচ্ছ মন নিয়ে শম্পার কাছে গিয়েছিলাম। শাড়ি-গয়নার-সজ্জায় হয়তাে বা শরীরে শম্পাকে একটু অন্যরকম মনে হচ্ছিল কিন্তু আবার সব মিলিয়ে সে যে একটু অন্যরকম হয়েছে তা মনে হচ্ছিল না। হাসি, চাউনি, কথাবার্তা সব সেই আগের মতন সহজ-সচ্ছল, আগের মতন দীপ্যমান। 

খুব সপ্রতিভতা নিয়ে গেলেও একটু মলিন মনে হচ্ছিল আমাকে? আঁটো গেঞ্জি ও ট্রাউজার-পরা শম্পার স্বামী কথায়-কথায় হা-হা করে হাসছিলেন। তার সুন্দর স্বাস্থ্য, সুন্দর চেহারা, সুন্দর পােশাক, সুন্দর ব্যবহার আমার মনে হচ্ছিল, তার কোথাও অভাব নেই। সঙ্গে যােগ হয়েছে এই চমৎকার বাড়ি, রূপসী স্ত্রী, উজ্জ্বল চাকরি। পৃথিবীতে এক-একটি লােক সমস্ত ভাগ্য নিয়ে জন্মায় আমার এরকম মনে হচ্ছিল। কেন-যে লােকে বলে, ও-সবের একটি যে পায় অন্যটা সে পায় না, তা আমি বুঝি না। আমি তাে দেখি যে পায় সে সবই পায়, যে পায় না সে কিছুই পায় না।

শম্পার স্বামী কারণে-অকারণে হাে-হাে করে হাসছিলেন, বলছিলেন, আপনারা অধ্যাপক মানুষ, অফুরন্ত অবসর, বছরে ছ’মাস ছুটি, আর আমাদের দেখুন উদয়াস্ত— অপ্রাসঙ্গিক হলেও বলি শম্পার স্বামী একজন ইঞ্জিনীয়ার। আমরা সবুজ ঘাসের উপর প্রজাপতি-গড়নের বেতের চেয়ারে বসেছিলাম। সামনে প্রজাপতি-গড়নের একটি বেতের টেবিল ছিল। শম্পা ঝকঝকে টিপয় থেকে চা ঢালছিল। তার ডান কানের দুল বিকেলের তারার মতন জ্বলছিল। তার মুখে খুশি, চুলে খুশি, পােশাকে খুশি। চারপাশে ফুলের বেড়, তাতে একশাে-রকম ফুল ফুটেছিল। একশাে রঙের স্বপ্ন ফুটেছিল। শম্পা, শম্পার স্বামী দুজনই চঞ্চল। 




আরও পড়ুনঃ গল্পঃ ঝড় 

বারেবারে চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ছে। ঘরে যাচ্ছে, বারান্দায় যাচ্ছে। শম্পা একবার রঙচঙে একটি সিনেমা পত্রিকা নিয়ে এল, তার এক-একটি ছবি-টবি দেখে উল্টে রেখে দিল। শম্পার স্বামী হঠাৎ উঠে টকটকে একটা রক্তগােলাপ ছিড়ে নিয়ে টেবিলে রাখলেন। অন্ধকারে রক্তগােলাপটা মিশে গেলে আমি উঠলাম। যে-উদার আতিথ্যে শম্পার স্বামী আমাকে গ্রহণ করেছিলেন কিছুদিন পর আর সেটা থাকল না। এই হয়তাে প্রকৃতির নিয়ম। শম্পার সঙ্গে বসে গল্প করছিলাম, শম্পাও উল বুনতে-বুনতে কথা বলছিল, গভীর করে চোখ তুলে তাকাচ্ছিল মাঝে মাঝে যে চাউনিগুলি আমি অতি-যত্নে অতি-গােপনে আমার ভবিষ্যৎ-বাক্সে জমিয়ে রাখছিলাম। এমন সময় বাইতে তার গাড়ির শব্দ শুনে আমার বুক ধক করে উঠল।

আর শম্পা উল বুনতে-বুনতে সহজ গলায় বলল ‘ঐ উনি এলেন বােধহয়। শম্পার স্বামী ঘরে ঢুকলেন জুতাের কড়া শব্দ তুলে বললেন, আমার দিকে চেয়ে ‘কখন এসেছেন? আমি অস্ফুটে বললাম, এই-তাে। হঠাৎ তাঁর গলার স্বর বদলে গেল; বললেন, এই তাে? একটু বেশি-বেশি আসা-যাওয়া করছেন মনে হচ্ছে আপনি? আমি হতভম্ব হয়ে গিয়ে কোনাে উত্তর খুঁজে পেলাম না। আরাে গলা চড়িয়ে উনি বললেন, পেয়েছেন কি আপনি? রােজ-রােজ আসা যাওয়া ? যান, বেরিয়ে যান এই মুহূর্তে, আর কখনাে যেন দেখতে না পাই আপনাকে এ বাড়িতে, যান, এখনি চলে যান’- ঘাড় নিচু করে আমি বেরিয়ে এলাম। শম্পার দিকে একবার না তাকিয়ে পারলাম না ও তার মুখে ভাবান্তর নেই, নিঃশব্দে উল বুনে চলেছে সে। 

জোর করে ভুলতে গেলাম শম্পাকে। যত ভুলতে যাই, আরাে জেগে ওঠে। আমার চারপাশে প্রতিটি জিনিসে শম্পার মুখের মুদ্রা অঙ্কিত হয়ে যায়। যেদিকে তাকাই, সে দাঁড়িয়ে থাকে। আর, সমস্ত শম্পা কোনাে একজন শম্পার দিকে সংকেত করে যায়। সেদিন একটু রাতে নিজের অজ্ঞাতে সেখানে গিয়ে দাঁড়ালাম। শম্পাদের বাড়ির পিছনদিকে। উজ্জ্বল আকাশ। জ্বলছে কোটি তারা। বাতাস নেই। লেকের জলের মধ্যে শম্পাদের আলাে-জুলা নিস্তব্দ বাড়ি জ্বলছে। সবকিছু একটি স্থির ছবির মতন। কোথাও কোনাে শব্দ নেই। আকাশে নিঃশব্দ আলাে ঝরছে। লেকের ঠাণ্ডা জলে শম্পাদের আলাে-জ্বলা স্থির বাড়ি।

চারপাশে কোথাও লােক নেই। বাতাস শান্ত শিশুর মতন কোথাও কোনাে বাড়ির ছাদে ঘুমিয়ে পড়েছে যেন। আমি লেকের জলের নিস্তব্ধ পাড়ে দাঁড়িয়ে। নেমে এলাম। ঠাণ্ডা পানি। খুব সাবধানে নামলাম পানিতে, একটুও ঢেউ না-দিয়ে, যাতে লেকের পানির ভিতরের শম্পাদের বাড়ি কিছুতেই ভেঙে না যায়। ডুব দিলাম তারপর। এক ডুব দিয়ে শম্পাদের পানির ভিতরের বাড়ির দরােজায় ঘা দিলাম। দরােজা খুলে গেল। শম্পা বসে আছে। আর কেউ নেই। শম্পাকে আমি পেলাম। শম্পার কাছে যাবার পথ আমার জানা হয়ে গেছে। এখন আর আমি কারাে পরােয়া করি না। এমনিভাবে তাকে আমি বারেবারে পাই।

@👉 Bengali Short Love Story গল্পটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার এবং কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না…..

3 thoughts on “Bengali Short Love Story Text | জল পরী – কাল্পনিক প্রেম”

Leave a Comment

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now