WhatsApp Channel
Follow Now
Telegram Group
Follow Now
Last updated on July 4th, 2023 at 12:49 am
Bengali Poem on Independence Day: ১৫ই আগস্ট, ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসে সকলকে জানায় আন্তরিক শুভেচ্ছা। আজকের এই বিশেষ দিনে ভারতবর্ষ স্বাধীনতা পেয়েছিল।
১৫ই আগস্ট (স্বাধীনতা দিবস) এবং তরুণ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)- এর (জন্মদিনে) একটি জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) আমার দেশ (Amar Desh) আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম।
আমার দেশ – সুকান্ত ভট্টাচার্য
এ আকাশ, এ দিগন্ত, এই মাঠ, স্বপ্নের সবুজ ছোঁয়া মাটি, সহস্র বছর ধ’রে একে আমি জানি পরিপাটি, জানি এ আমার দেশ অজস্র ঐতিহ্য দিয়ে ঘেরা।
এখানে আমার রক্তে বেঁচে আছে পূর্বপুরুষেরা,
যদিও দলিত দেশ, তবু মুক্তির কথা কয় কানে, যুগ যুগ আমরা যে বেঁচে থাকি পতনে উত্থানে।
যে চাষি কেটেছে ধান, এ মাটি নিয়েছে কবর, এখনো আমার মধ্যে ভেসে আসে তাদের খবর।
অদৃশ্য তাদের স্বপ্নে সমাচ্ছন্ন এ দেশের ধুলি, মাটিতে তাদের স্পর্শ, তাদের কেমন করে ভুলি?
আমার সম্মুখে ক্ষেত, এ প্রান্তর উদয়াস্ত ঘাটি, ভালবাসি এ দিগন্ত, স্বপ্নের সবুজ ছোঁয়া মাটি।
এখানে রক্তের দাগ রেখে গেছে চেঙ্গিস্, তৈমুর, সে চিহ্নও মুছে দিল কতো উচ্চৈঃশ্রবাদের খুর।
কতো যুদ্ধ হয়ে গেছে, কতো রাজ্য হয়েছে উজাড়, উর্বর করেছে মাটি কতো দিগ্বিজয়ীর হাড়।
তবুও অজেয় এই শতাব্দী- গ্ৰথিত হিন্দুস্থান, এরই মধ্যে আমাদের বিচলিত স্বপ্নের সন্ধান।
আজন্ম দেখেছি আমি অদ্ভুত নতুন এক চোখে, আমার বিশাল দেশ আসমুদ্র ভারতবর্ষকে।
আরও পড়ুনঃ
Shadhinota Dibosh Bangla Kobita
স্বাধীনতা – তাপস ঠাকুর
আমাকে কবি বলো না, আমি কবিতা লিখিনি, কবিতা পড়িনি, শুধু কবিতাকে ঝড়ে পরতে দেখেছি, শুকনো পাতার মত পুড়ে মরে যেতে দেখেছি।
ঐ কবিতাকে দেখেছি শ্বশানের পথে-ক্ষুধার্ত।
যেন দুরবিক্ষে তলিয়ে গেছে তার ভিটে-মাটি।
সেই কবিতাকে আমি, বুকে আগলে রাখতে পারিনি, অবজ্ঞা-অবহেলা আর অনাদরে সে এখন অন্ধ।
সেই কবিতা আমি বুঝিনি,জানিনি কোনদিন, শুধু তার চোখে বার্তা পেয়েছি নতুন দিনের-নতুন আলোর।
হ্যা, আমি সেই বার্তা বাহক।
কালের খেয়ায় আবার এসেছি
এই অর্ধমৃত পৃথিবীতে।
ঐ পায়ে ফেসা ফুল , ডাস্টবিনের পাশে পরে থাকা অসহায় নবজাতকের চোখ,
যেন হয় ধুসর অন্ধকার পৃথিবীর -ছোট ছোটআলোকময় দ্বীপ।
অথবা এই অসভ্য পৃথিবীর বাগিচা।
অথচ, তারা পরে আছে পথে-ধুলোয়,
তাদের ভবিষ্যৎকারো মুঠোয় বন্দী।
আমি কী লিখব তার প্রতি-উত্তর ?
ঐ বঞ্চিত চোখ, ঐ পায়ে ফেসা ফুলগুলি
কেবলই একটি কবিতা খুঁজে প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে, যেন কবিতা এই অন্ধকার পৃথিবীতে মৃত, যেন কোন এক বিশেষ শ্রেণীর আলোক উজ্জ্বলরঙমহলে,
অথবা বাজার অর্থনীতির লোভী চক্ষুতেবন্দী এই কবিতা ।
যদি আমার একক পৃথিবী ভেসে যায় কোনদিন জনতার জোয়ারে , তবে শহরের আনাচে কানাচে প্রতিটি রাস্তায় প্রতিটি প্রানে, বিশাল অক্ষরে।
তোমাদের প্রিয় কবিতাটি আমি লিখে দিয়ে যাব !!
যার নাম- স্বাধীনতা।
Patriotic Poems In Bengali
স্বাধীনতা তুমি – শামসুর রাহমান
স্বাধীনতা তুমি রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।
স্বাধীনতা তুমি কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা- স্বাধীনতা তুমি
শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা স্বাধীনতা তুমি পতাকা শোভিত শ্লোগান-মুখর ঝাঁঝালো মিছিল।
স্বাধীনতা তুমি ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি। স্বাধীনতা তুমি রোদেলা দুপুরে মধ্যপুকুরে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার।
স্বাধীনতা তুমি মজুর যুবার রোদে ঝলসিত দক্ষ বাহুর গ্রন্থিল পেশী।
স্বাধীনতা তুমি অন্ধকারের খাঁ খাঁ সীমান্তে মুক্তিসেনার চোখের ঝিলিক।
স্বাধীনতা তুমি বটের ছায়ায় তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীর শানিত কথার ঝলসানি-লাগা সতেজ ভাষণ। স্বাধীনতা তুমি চা খানায় আর মাঠে-ময়দানে ঝোড়ো সংলাপ।
স্বাধীনতা তুমি কালবোশেখীর দিগন্তজোড়া মত্ত ঝাপটা।
স্বাধীনতা তুমি শ্রাবণে অকূল মেঘনার বুক
স্বাধীনতা তুমি পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন।
স্বাধীনতা তুমি উঠানে ছড়ানো মায়ের শুভ্র শাড়ির কাঁপন। স্বাধীনতা তুমি বোনের হাতের নম্র পাতায় মেহেদীর রঙ।
স্বাধীনতা তুমি বন্ধুর হাতে তারার মতন জ্বলজ্বলে এক রাঙা পোস্টার।
স্বাধীনতা তুমি গৃহিণীর ঘন খোলা কালো চুল, হাওয়ায় হাওয়ায় বুনো উদ্দাম।
স্বাধীনতা তুমি খোকার গায়ের রঙিন কোর্তা, খুকীর অমন তুলতুলে গালে
রৌদ্রের খেলা।
স্বাধীনতা তুমি বাগানের ঘর, কোকিলের গান, বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা,
যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা।
এই কবিতার কোনও তুলনাই হয়না। স্বাধীনতাকে নিয়ে এমন নিটোল নির্মাণ ক’জন কবির কলম থেকে বেরবে তা নিয়ে সংশয় আছে এই কাব্যপাঠকের।