Last updated on October 24th, 2023 at 10:14 pm
৭ টি বাছাই করা শিক্ষক দিবসের কবিতা : ভারতবর্ষে শিক্ষক দিবস পালন করা হয় ৫ সেপ্টেম্বর। এই দিনটি একজন আদর্শ শিক্ষক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিন। তাঁর জন্মদিন অনুসারেই পালন করা হয় ‘শিক্ষক দিবস’। যিনি ছিলেন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি, এবং ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি। ভারতবর্ষের সকল বিদ্যার্থী তাঁকে সম্মান জানানোর জন্য তাঁর জন্মদিনে শিক্ষক দিবস পালন করে থাকে।
তাই আজকে সকলের উদ্দেশ্যে শিক্ষক দিবসের গুরুত্ব এবং শিক্ষকের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্যই সকলের মাঝে শিক্ষক দিবসের কবিতা গুলো শেয়ার করব যেগুলো আপনাদের শিক্ষক দিবস উদযাপনে শিক্ষকের প্রতি সম্মান শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা প্রকাশে সাহায্য করবে।
আপনারা আমার এই শিক্ষক দিবসের কবিতা গুলো প্রত্যেকের মাঝে শেয়ার করে তাদের মধ্যে শিক্ষকের গুরুত্ব তুলে ধরতে পারবেন এবং শিক্ষকের প্রতি সম্মান এবং ভালোবাসা প্রদর্শনে সাহায্য করতে পারবেন। নিচে শিক্ষক দিবসের বাছাই করা কিছু কবিতা তুলে ধরা হলো।
শিক্ষক দিবসের কবিতা
লেখক – ফাইয়াজ ইসলাম ফাহিম
হে প্রিয় শিক্ষক কি দিয়ে করব
আপনাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি!
আমি আপনাতে আমার ভালবাসা
দিয়েছি জলাঞ্জলি।
হে প্রিয় শিক্ষক
কিসে করব আপনাকে অপমান!
আমার আমিত্ব,জৌলুস
আপনারি যে দান?
হে প্রিয় শিক্ষক
কিসে যাব আপনারে ভুলে,
আপনার মত মহান মানুষ
পাইনি আমার শিক্ষাকূলে?
হে প্রিয় শিক্ষক
কিসে ভুলব আপনার সুদর্শন মুখ!
বাবা হারিয়ে আপনাতে
খুজে ছিলাম সুখ।
হে প্রিয় শিক্ষক
কেমনে দিব বাকি শিক্ষা জীবন পাড়ি!
আমি যে আপনাকে ছাড়া
হয়ে গেছি আনাড়ি।
হে প্রিয় শিক্ষক সামনের পথ
কেমনে চলিব একা! একা!
জীবন নামের রেলগাড়ি
আজ চলছে আঁকা-বাঁকা।
হে প্রিয় শিক্ষক
থাকব আপনাকে দেখার আশে!
বিধাতার কাছে প্রাথর্না করি
বারংবার দেখার সুযোগ আমার যেন আসে?
- আরও পড়ুন:
- 👉 ৩ টি সেরা শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তব্য ও কিছু কথা
- 👉 ৫০ টি সেরা শুভ শিক্ষক দিবসের শুভেচ্ছা বার্তা, ক্যাপশন
- 👉 Happy Teachers Day Wishes in Bengali
- 👉 ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর জীবনী, বানী ও রচনা বাংলা
শিক্ষক দিবসের কবিতা আবৃত্তি
কবিতা – শিক্ষক
লেখক – চন্দন নাথ
কার সাথে কার লড়াই হয়েছে কবে
কোন নদীটির কতটুকু গভীরতা
শুধু না এসব, শিক্ষক বলি তাকে
গেঁথে দেন যিনি হৃদয়ে প্রাণের কথা।
যাঁর কাছে শুরু অক্ষর পরিচয়
যাঁর কাছে শেখা এক দুই ধরাপাত
জানি, চিরদিনই মাথার উপরে থাকে
বড় স্নেহময় তাঁর সে দুখানি হাত
ভুলিনা আমরা ছোটবেলাকার স্কুল
শাসন এবং স্নেহমাখা প্রশ্রয়
পড়া পারবার গর্বিত অনুভব
পড়া ভুলবার লজ্জা জড়ানো ভয়।
স্কুল শেষ করে বড় হয়ে উঠি ক্রমে
তবু সব স্মৃতি যত্নে আগলে রাখি
যারা গড়েদেন আমাদের ছোটবেলা।
তাদের সে স্মৃতি কক্ষনো মোছে নাকি।
তারা কি কেবলই শিক্ষক-দিদিমণি
শুধু কি স্কুলেরই গল্পে জড়িয়ে তাঁরা?
তাদের সঙ্গে রয়ে যান আরও কেউ
খুঁজে দেন যাঁরা উজানের স্রোতধারা।
হতে পারে তাঁরা বড্ড তুচ্ছ কেউ
রিক্সা চালক, হকার বা মজদুর
মাটিমাখা কোনো কৃষক, বাউল কোনো
একদিন কানে বেজে ছিল যাঁর সুর
তারাও যে দেন প্রতিদিন কত কথা
যে কথা আমরা হৃদয়ে আঁকড়ে বাঁচি
সে কথায় ভরা আরেক সহজপাঠই
আনে আমাদের পৃথিবীর কাছাকাছি
ভাবি কি যে মাসি ছোট্টোবেলায় বুকে
আগলে রেখেছে আমায় আদর করে
তাঁরও ছোঁয়া টুকু লেগে থাকে চিরকাল
আমাদের সব স্বপ্নের অক্ষরে।
কে তবে বলবে শিক্ষক তাঁরা নয়
নাই বা এলেন কোনোদিন স্কুলে ক্লাসে
তাঁরা জুড়ে দেন দিন দিন প্রতিদিন
কত কিছু আমাদের সিলেবাসে।
সারাটা জীবনই আমাদের পাঠশালা
সারাটা জীবনই মস্ত একটা স্কুল,
শিক্ষক তাঁরা যাঁরা জীবনের স্কুলে
শুধরান রোজই আমাদের যত ভুল।
শিক্ষক দিবসের ছোটদের কবিতা
কবিতা – অপরাজেয় বীর
লেখিকা – জুলেখা হাসান
শিক্ষক আমি আলোর পথের নির্ভীক অভিযাত্রী, আমার অনুসরণ করে, সকল ছাত্র-ছাত্রী। পরিবারে শিশুর শিক্ষা জন্ম হতে শুরু, শিক্ষক হলেন জ্ঞানের আলো বিতরনের গুরু।
জাতির জন্য কল্যাণকর আদর্শবান শিক্ষক,
শিক্ষক আমি আদর্শ ও নৈতিকতার রক্ষক।
শিক্ষক আমি আদর্শ আর নৈতিক শিক্ষায় রত,
শ্রদ্ধা জানাই বিশ্ববাসীর শিক্ষক আছেন যত।
শিক্ষক আমি ব্যাস্ত থাকি জ্ঞান বিজ্ঞান চাষে,
শিক্ষকগনকে সম্মান দিলে সাফলতা আসে।
পরিবর্তিত শিক্ষার ক্ষেত্রে বদলে গেছে শিক্ষা,
নতুন জ্ঞান অর্জন কর, এই হোক মোদের দীক্ষা।
শিক্ষক আমি গড়তে চাই সমৃদ্ধশালী জাতি,
মহান পেশা শিক্ষকতা আঁধার পথের বাতি।
রক্ষক যখন ভক্ষক হয়, অমর্যাদার শুরু,
শিক্ষার আলো ছড়াই মোরা, জাতি গড়ার গুরু।
বঞ্চনা ও বৈষম্যে নিমজ্জিত শিক্ষক শতশত,
দেখি তোরা বঞ্চিত করতে পারিস কতো।
অর্থ নেই সম্পদ নেই, নেই বসত ভিটা নীড়,
শিক্ষক আমি শ্রেষ্ঠ সবার অপরাজেয় বীর।
শিক্ষক দিবসের বিখ্যাত কবিতা
কবিতা – শিক্ষক
লেখক – সনাতন কুণ্ডু
শিক্ষক মানে নয়তো শুধু — এম এ বি এড ডিগ্রিধারী
ব্যাঙ্কে পড়া জমা নিয়মিত — মোটা টাকা মাসকাবারী ।
শিক্ষক মানে নয়তো শুধু — লোকসমাজে উঁচু মাথা
রইবে সবাই পায়ের নিচে –নয় মুখে অন্তরের কথা।।
শিক্ষক মানে নয়তো শুধু — দশটা পাঁচটা ডিউটি করা
গৌড়ী সেনের অর্থ ভেঙ্গে — লাক্সারিতে জীবন গড়া।
শিক্ষক মানে নয়তো শুধু — যত জ্ঞানের বুলি ছড়ানো
বোঝদার এড়িয়ে অবুঝের থেকে — প্রশংসা কুড়ানো।।
শিক্ষক মানে নয়তো শুধু বেকারত্বের অবসান
সমাজের বুকে উঠা যেন — এক ধাপ জাত কুল মান।
শিক্ষক মানে নয়তো শুধু — ছড়িতে শিষ্য শাসন
বুঝুক বা না বুঝুক তবু দেবে — কত কর্তব্যের ভাষণ।।
শিক্ষক মানে নয়তো শুধু — জেনো পেশার অহংকার
পরিবারে সবথেকে সে দামি — মূল্যবান অলংকার ।
শিক্ষক মানে নয়তো শুধু — যত ছায়াদান বৈশাখে
আদর্শবান শিক্ষক হয় — কেবল দু চারটে লাখে।।
শিক্ষক মানে শিক্ষিত — ক্ষমাশীল কর্তব্যপরায়ণ
শিষ্যের মনের চাহিদা বুঝেই — করাবেন অধ্যায়ণ।
শিক্ষক মানে নম্র সভ্য — হবে মিষ্টি মুখের বানী
পাঠদানে তার বহিঃপ্রকাশ — হবে সদা সাবধানী ।।
শিক্ষক মানে গুণী,দক্ষ — সাথে অমায়িক যত্নশীল
হতেই হবে সৎ প্রাণবন্ত — সর্বদাই দায়িত্বশীল ।
শিক্ষক মানে মার্জিত ভাষা — রুষ্টতার স্বভাব ছাড়ি
দিতেই হবে এই সাতটি গুণের — সপ্ত সাগর পাড়ি ।।
শিক্ষক মানে ডিসিপ্লিন — মরালিটি রবে চিরকাল
স্মার্টনেসের সাথে হবেন তিনি — সর্বদাই পাংচুয়াল।
শিক্ষক মানে শিক্ষাদানে — হতেই যে হবে দক্ষ
আদর্শবান ছাত্রছাত্রী গড়ায় — হবে তাঁর মূল লক্ষ্য ।।
শিক্ষক মানে প্রেম প্রীতি — ভক্তি শ্রদ্ধার এক লাঠি
মূল্যায়ণে রাখতেই হবে সদা — সততার মাপকাঠি ।
শিক্ষক মানে হৃদমাঝারে — যেন অসীম ধৈর্য্য রয়
চাই নব কৌশলে শিক্ষাদানে — দূরদর্শিতার পরিচয় ।।
শিক্ষক দিবসের সেরা কবিতা
কবিতা – বদলে গেছে শিক্ষক ও শিক্ষা
লেখক – মোঃ অনিক দেওয়ান
বদলে গেছে শিক্ষার ক্ষেত্র
বদলে গেছে শিক্ষা
শিক্ষা নিয়ে শিক্ষক সকল
করেন এখন ভিক্ষা।
পাড়ায় পাড়ায় গড়ে তোলেন
নানান কোচিং সেন্টার
মন ভুলানো বিজ্ঞাপণে
করেন ছাত্র হান্টার।
ছোট একটি রুমে গড়েন
একটি শ্রেণীকক্ষ
ঠাসাঠাসি ছাত্র-ছাত্রী
মেধাতে নয় দক্ষ।
মেধা বিকাশ নয় উদ্দেশ্য
টাকা আয়ের রাস্তা
এমনি করে ভাঙ্গেন তারা
ছাত্র-ছাত্রীর আস্থা।
ভর্তি হতে হলে আগে
অগ্রিম গুনতে হয়যে
তা-না হলে ছাত্র/ছাত্রীর
ভর্তি হতে ভয়যে।
প্রশ্নফাঁসে মদদ দিতে
কিছু শিক্ষক রত
কোচিং সেন্টারের নাম উজ্জ্বল
করতে শিক্ষক ব্রত।
এমন শিক্ষা চাইনা মোরা
শিক্ষক নয়তো বটে
একটা জাতি চায়না কভু
এমন শিক্ষা মোটে।
আদর্শ শিক্ষক কামনায়
উৎসুক একটা জাতী
শিক্ষক যেনো হয়ে উঠেন
আঁধার পথের বাতি।
শিক্ষক দিবসের ছোট কবিতা
কবিতা – শিক্ষক মোদের প্রাণের গুরু
লেখক – সৈয়দ নিলয়
শিক্ষক মোদের প্রাণের গুরু
আর্দশের-ই প্রতীক
তার দেখানো পথে হাঁটে
ছাত্র-ছাত্রী পথিক।
শিক্ষক জ্বালান মনে প্রদীপ
প্রতিভা বিকাশে
শিক্ষক ছড়ান জ্ঞানের আলো
অশিক্ষার আকাশে।
শিক্ষক হলেন আলোর পথের
সত্য নির্ভীক যাত্রী
অনুসরণে পথ চলে
সকল ছাত্র-ছাত্রী।
মায়ের কাছে শিশুর শিক্ষা
জন্ম থেকেই শুরু
মায়ের পরে শিক্ষক হলেন
জ্ঞানের অন্য গুরু।
একটা জাতির জন্য মঙ্গল
আদর্শবান শিক্ষক
একজন শিক্ষক হনযে জাতির
প্রতিভার-ই রক্ষক।
যেসব শিক্ষক আদর্শতায়
শিক্ষা দিতে রত
তাদের দেখলে হয়যে আমার
শ্রদ্ধায় মাতা নত।
শিক্ষক সকল ন্যস্ত থাকেন
জ্ঞান ছড়ানোর চাষে
সম্মান করলে শিক্ষকদেরকে
সাফল্যতা আসে।
শিক্ষক হলেন শ্রদ্ধার পাত্র
শিক্ষার অতি সুজন
শিক্ষকরাই করেন একেকজন
উকিল ডাক্তার সৃজন।
আদর্শ শিক্ষকের কবিতা
কবিতা – শিক্ষক
লেখক – মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম
শিক্ষকতা মহান পেশা বলে গেছেন যিনি
সত্যি কথা তিতা অতি ভুলে বসেন তিনি।
মাষ্টার মশাই শিক্ষাগুরু আগে পেতেন কদর
হালের কালে বেয়াদবি শুনি সবাই বাঁদর
গুরুভক্তি পায়ে সালাম গেছে অনেক আগে
ধোলাই খাওয়া হরদম চলে মাষ্টার বিনে বাগে
কবিগুরু রবি ঠাকুর জন্মায় না আজ, একাল
হরহামেশাই খবর আসে মাষ্টার মশাই নাকাল
পিতৃতুল্য, মাতৃতুল্যা দিতাম সম্মান যাদের
এই জমানায় খড়ম হস্তে দেখায় তোমায় নাদের
আইলো গেলো কত শিক্ষক ছাত্র জীবন ভর
পিতারকালে শুনতাম শুধু শিক্ষকতে ডর।
মানুষ হতে পারলাম কি আর লেখাপড়া করে
মর্যাদা আর শিষ্টাচার বুঝি, কি সত্যি যাদুঘরে।
শিক্ষাগুরু সত্যি হারিয়ে স্বীয় মান ও সম্মান
দোষ কি শুধুই ছাত্রের নাকি নিজ পেশার অপমান।
স্কুলেতে না পড়িয়ে আজ বাসায় কোচিং ব্যাবসা গুরুভক্তি মর্যাদাটা আজ, তা-ই তো বুঝি ঝাপসা
টিউশনির নামে চলে গল্প প্রেম ও পিরীতি
ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি হয় কি গুরুর নীতি।
পিতাসম শিক্ষক না হয়ে, হলে পরিমল ও সিরাজ এযুগের মাস্টার হলে, হৃদয়ে করবে কি আর বিরাজ?