Heart Touching Love Stories in Bengali | হৃদয় ছোঁয়া প্রেমের গল্প

WhatsApp Channel Follow Now
Telegram Group Follow Now

Last updated on July 4th, 2023 at 12:50 am

Rate this post
আজকের Bangla love story টির নাম – “হরপার্বতী সংবাদ” গল্পের প্রধান চরিত্রে সুপ্রিয় ও নন্দিতা, বিষয় – অন্তরের ভালোবাসা, Romantic premer golpo এবং Bengali sad love stories অথবা Bangla jokes আরও পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগ টিকে সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথে থাকুন, গল্পটি পড়িয়া যদি আপনার ভালো লাগিয়া থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এবং শেয়ার করিতে ভুলিবেন না।

Love stories in bengali

True Love Stories in Bengali – সত্যি কারের প্রেমের গল্প

আজকের গল্প – হরপার্বতী সংবাদ


মাথার চুলের রাশির মধ্যে দাড়া চিরুনিখানা টানতে টানতে নন্দিতা বললে, বলেছিলাম না তখন? 
এখন শুনতে পাচ্ছ তাে?
টেবিলের কাগজপত্রের উপর কলমটা রেখে মুখ ফিরিয়ে সুপ্রিয় বললে, শুনিনি কিছু, অত গােলমাল কিসের? জানাে না? আদর দেবার বেলায় তখন তাে দশখানা হাত বার করবে। আমি তখনই জানি কপালে দুঃখ আছে। এখন সামলাও!
আগে কি হল—তাই আগে শুনি?
হবে আমার শ্রাদ্ধ। ইচ্ছে হয় বাইরে গিয়ে বড়াে বড়াে কান দুখানা পেতে শােনাে গে। সুপ্রিয় হেসে বললে, বড়াে কান আমার না তােমার ? রাগ করে নন্দিতা বললে, আচ্ছা, আমার না হয় বড়াে কান, আমি গাধা। আর তুমি ? দাঁত বের করে হাসছ যে বড়াে? দাঁত নয়, দাঁতাল। সকাল বেলাতেই ঝগড়া আরম্ভ করলে তাে? তবু শুনতে পেলুম না বাইরে গােলমালটা কিসের? সুপ্রিয় বললে, আরে শােনাে, চলে যেয়াে না আচ্ছা গাধার কান নয়, ইদুরের কান, হয়েছে তাে? এবার শােনাে। এলাে খোঁপা পিছন দিকে ফিরিয়ে নন্দিতা দরজার কাছে এসে দাঁড়াল। খরদৃষ্টিতে চেয়ে বললে, রাতের জানােয়ার দিনে হয় মানুষ, কেমন? হাসিমুখে সুপ্রিয় বললে, আরেকটু কাছে এসাে।




ঝগড়াও করবে অথচ হাতের নাগালের বাইরেও থাকবে, এ আমার অসহ্য। এসাে বলছি হাতের কাছে। মুখ দেখলে ঘেন্না করে।-বলে মাথায় একটা প্রবল ঝাঁকুনি দিয়ে নন্দিতা চলে গেল। কিন্তু পড়াশুনােয় সুপ্রিয়র আর মনােযােগ দেওয়া হল না। বাইরের গােলমাল তখনও থামেনি। উঠে সে বাইরে এসে দাঁড়াল। ব্যাপারটা অবশ্য এমন কিছুই নয়। তার বেবি কুকুরটা এমন একটা গণ্ডগােল প্রায়ই বাধিয়ে বসে। কুকুরটা আজকাল ভারী দুষ্টু হয়েছে। শৈশব থেকে এখানে সে মানুষ, আদরে ও যত্নে লালিত, এখন তার চেহারায় ভঙ্গিতে ও কণ্ঠে এসেছে তারুণ্য, রােখটা বেড়ে গেছে। এই পাড়ার সে কাকে যেন তেড়ে গিয়েছিল, সে বাড়ির কর্তা গিয়েছেন ক্ষেপে। বলছেন পুলিসে খবর দিয়ে এখুনি ফাইল করাতে পারি, তা জানাে? ওদের জানিয়ে দিয়াে, বড়ােমানুষি ফলাতে হয় ভবানীপুর ছেড়ে বালিগঞ্জে যাক্, এদিকে ওসব চলবে না। আমরা হালদার পাড়ার ছেলে, অমন ঢের ঢের চালাকি দেখেছি। সুপ্রিয় বললে, তথাস্তু। মুখ ফিরিয়ে নন্দিতা বললে, নির্লজ্জ তুমি। কেন নির্লজ্জ? যেতে বলছে বালিগঞ্জে, তাই যাব। সুপ্রিয় বললে, হালদার পাড়ার যে কুকুর মার খায়, বালিগঞ্জে গিয়ে সে মাথায় চড়ে বসে। জানােয়ারের ওপর মমতা আধুনিক কালচারের লক্ষণ। 

তুমিই তাে সেদিন বলেছিলে, জানােয়ার থেকেই মানুষ না মানুষ থেকে জানােয়ার?
ওরে, এই কেষ্ট?
আজ্ঞে, বাবু?
ওপরে আয়।
চাকরটা উপরে উঠে এল। নন্দিতা মুখ ঝামটা দিয়ে বললে, হতভাগা, তােকে না বলেছি দিনের বেলা বেবিকে বেঁধে রাখবি?
ভীষণ অভিযােগ জানিয়ে কেষ্ট বললে, তাই তাে রেখেছিলুম মা, কিন্তু শেকল ছিড়ে বেরিয়ে গেছে। সুপ্রিয় বললে, ওদের বাড়ির লােককে কামড়াতে গিয়েছিল, না রে? আজ্ঞে না বাবু, ও লােকটা আকাট মিথ্যুক। আমাদের বেবির সঙ্গে অন্য কুকুরের ঝগড়া বেধেছিল, ওনার ছেলে মারলে ঢিল, তাই কেবল একটু গোঁ গোঁ করেছিল! নন্দিতা বললে, অন্য কুকুরের সঙ্গে যদি ঝগড়া করে, তুই দরজা বন্ধ করে রাখিসনে কেন?
রাখি বৈকি মা কেষ্ট বললে, তবুও সেদিন ছুটে বেরিয়ে গেল অত বড়াে পাঁচিল ডিঙিয়ে। কী গায়ে জোর। মাদী কুকুরেরা বাঁধা থাকতে চায় না। থাম, নিজের কাজে যা বলে নন্দিতা তার আগেই নিচে নেমে গেল। 

সুপ্রিয় ততক্ষণে গা ঢাকা দিয়েছে। একটু পরেই বেবির দীর্ঘ আর্তনাদ, আবার সুপ্রিয়র শান্তি ভঙ্গ হল। পড়াশুনাে রেখে নিচে নেমে গিয়ে দেখলাে, চেরীগাছের ছড়িটা হাতে নিয়ে কোমর বেঁধে নন্দিতা বেবিকে বেদম প্রহার করতে আরম্ভ করেছে। সুপ্রিয় দৌড়ে গিয়ে স্ত্রীর হাতখানা ধরে ফেললে।—আরে কি হচ্ছে? অত মারলে
মরে যাবে যে?
মরুক, ওকে আমি খুন করব।
সে কি, ও যে অবলা!
ছাড়াে বলছি-
না।
ফিক্ করে নন্দিতা হেসে ফেললে। কুকুরটা এই সুযােগে ল্যাজটা গুটিয়ে কাঠের বাক্সর পাশে গিয়ে লুকিয়ে কো কো করে কাঁদতে লাগল। হাসিমুখে নন্দিতা বললে, ছড়িগাছা এখনও হাতে আছে, সাবধান বলছি। মুখ টিপে সুপ্রিয় বললে, সাবধানেই তাে আছি। আমি মার খেয়ে মরে গেলে কানে হীরের দুল পরতে পারবে তাে? ছড়িগাছা ফেলে দিয়ে নন্দিতা বললে, তাই বলে তােমার কুকুর পাড়ার লােককে কামড়ে আসবে?
আর যারা ঘরের লােককে কামড়ায়।





মুখ ফিরিয়ে বিদ্যুদ্বেগে নন্দিতা ছড়িগাছা হাতে তুলে নেবার চেষ্টা করতেই সুপ্রিয় সেখান থেকে ছুটে পালিয়ে গেল। নন্দিতা ওখান থেকে চেঁচিয়ে বলতে লাগল, আমি কামড়াই, কেমন? হীরের দুলের ধাপ্পা তুমি আর কত কাল চালাবে শুনি?এই বলে সে রান্নাঘরে গিয়ে ঢুকল। সুপ্রিয় হাসছিল। দুজনের ভিতরকার এই অদ্ভুত আর অহেতুক সংঘাতটা প্রায় নিত্য দিনের। এখানে সম্প্রীতির অভাব বলে ভুল ঘটতে পারে, কিন্তু অন্ততঃ ওদের দুজনের মধ্যে সে ভুল ঘটেনি। সুপ্রিয় কাগজপত্রের মধ্যে মুখ রেখে চোখের তারা দুটো উজ্জ্বল করে হাসছিল। কুকুর কেন, সামান্য ব্যবহারিক খুঁটিনাটি নিয়েও ওদের বিবাদ চলে। এই যেমন ধরাে সেদিন সুপ্রিয় নিজেই আরম্ভ করলে, শীঘ্র বলাে, কেন ছিড়ে গেছে জামার বােতাম?
বােতামটা অবশ্য ধোপার বাড়ি থেকেই ছিড়ে এসেছে।
কিন্তু নন্দিতা বলে, আমিই ছিড়েছি, বেশ করেছি।
এর ক্ষতিপূরণ ?
ওঃ গবর্নর এলেন শাসন করতে! যাও, বেরােও।

বাঁকা চোখে চেয়ে সুপ্রিয় বলে, মনে রেখাে, আমি যদি পায়ে রাখি তবেই তুমি দাসী। ঝংকার দিয়ে নন্দিতা বলে, ওরে চরিত্রহীন, দাসীর সঙ্গে কোনাে ভদ্রলােক- হঠাৎ সুপ্রিয় দার্শনিক হয়ে ওঠে, তাই তাে ভাবছি, ঠিকই বলেছ। আমি ভাবি চতুরা স্ত্রীলােকের কী অদ্ভুত ইন্দ্রজাল! আমি চতুরা?নন্দিতা বলে, ভিক্ষে চাইতাে কে পেছনে পেছনে এসে? সাবধান কিন্তু সুপ্রিয়, আমি হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেব বলছি। মুখের হাসি টিপে সুপ্রিয় বলে, আচ্ছা, দাও ভেঙে, দেখি। তােমার হাঁড়িতে আর কি কি ‘সন্দেশ’ আছে আমিও তখন বলব, হে সমবেত ভদ্রমহােদয় ও ভদ্রমহিলাগণ, আপনারা সকলে শ্রবণ করুন, একটি বিষধর উর্ণনাভের জালে একটি নিরুপায় মক্ষিকা আবদ্ধ হয়েছিল। একটা অদ্ভুত চক্রান্তে সে বন্দী! মুখখানা বিকৃত করে নন্দিতা বলে, মক্ষিকাই বটে, আঁস্তাকুড়ের মাছি। থুড়ি, সুপ্রিয় বলে, মক্ষিকা নয়, ভ্রমর। আর সেই ভ্রমরের পাখার গুঞ্জনে বসন্তরাগ শুনে রক্তগােলাপ মাথা দুলিয়ে উঠত। অমনি নন্দিতা হেসে ফেলে, আমি মাথা দোলাতুম? 
কী মিথ্যেবাদী তুমি? কবিতা লিখে পাঠাত কে, শুনি? 

পুরনাে কথাটা সুপ্রিয় স্মরণ করিয়ে দেয়, কবিতার সুখ্যাতি করত কে শুনি? নন্দিতা বলে, স্বপ্নকন্যার রূপের প্রশংসা করােনি তুমি? আমরণ উপবাসের ভয় দেখিয়েছিল কে? উত্তরটা তখনই সুপ্রিয় জুগিয়ে দেয়, হে ঈশ্বর, তুমি সাক্ষী। কবির কেঁকড়াচুল আর কালাে চোখের তারার কে জানিয়েছিল সুখ্যাতি গােপনে ? নিজের চেহারার কী গর্ব! বেহায়া! বলে তখন নন্দিতা রণে ভঙ্গ দেয়। আগে নতুন ঘরকন্নায় সুপ্রিয়র মন বসতে চায়নি। আগে মনে হয়নি তাকে ভাবতে হবে বাজার খরচের কথা, তেল-নুনের খবর, চাকর-বামুনের মাইনে। এ যেন তার কাছে একটা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা। নন্দিতাকে সে বরাবর জানিয়ে এসেছে আকাশের চেহারাটা উজ্জ্বল নীল আর লােয়ার সার্কুলার রােডের রাত্রির দৃশ্যটা হেমন্তের কুয়াশা, আর স্তিমিত আলােকস্তম্ভ মিলিয়ে একটা স্বপ্নজড়ানাে রহস্য পথ। নন্দিতার চুলের অরণ্যে নববর্ষার যেন ঘনঘটা, আর মুখে শরতের সােনার রৌদ্র ঝলােমলাে, আর আঁচলে উচ্ছ্বসিত চৈত্র পূর্ণিমার দোলা। 




আগে সুপ্রিয় ঘুমিয়ে পড়তাে নিবিড় তন্দ্রায় মােটরের মধ্যে নন্দিতাকে ঘিরে, রবারের চাকায় জড়িয়ে যেত কলকাতা শহর পাকে পাকে, ঘন আলিঙ্গনে যেত মিলিয়ে রেড রােড আর চৌরঙ্গীর পাতালপথ। আশ্চর্য সেই অতিপরিচিত অপরিচয় কথা বললে যেন ধ্যান ভেঙে যেত। ঘুমের রসে টস টস করছে কণ্ঠস্বর—যেন দূরের কোন এক তপােবনে তপস্বীর মৃদু স্তবগান। দেওদারের স্তব্দ বিশাল ছায়ায় দাঁড়িয়ে মুগ্ধ চক্ষে সুপ্রিয় বললে, ঘােমটা দাও মাথায়। না। নন্দিতা আদরে জড়িয়ে বললে, আড়াল করতে পারবাে না তােমাকে। 
আড়াল খুলে আবিষ্কার করে নেব। লজ্জা করে যে তােমার সামনে ঘােমটা দিতে। কেন? আগে থেকেই তাে দেখে নিয়েছ। আড়ালে রাখার আর আছে কি? শীতের মধ্যাহ্নে দেওদারের নিভৃত স্তব্ধ ছায়ায় দাড়িয়ে নন্দিতা আবার বললে,নতুন বউ আসে ঘােমটা দিয়ে, সেই জন্য তাকে খুঁজে বার করতে হয়। সুপ্রিয় বললে, হল না। বরং যতই জানতে থাকে ততই ঘােমটা খােলে মেয়েরা। বিয়ের পরেও নন্দিতা ঘােমটা দিল না, সিঁথির সিন্দুর লুকিয়ে রাখল একপাশে চুলের ঘন অন্ধকারে অরণ্যের গভীরে যেমন গােপনে থাকে অগ্নিশিখা। এটা কেমনতরাে?

নন্দিতা বললে, আমাদের তরুণ কৌমার্যকে জাগিয়ে রাখব দুজনের সামনে চিরন্তন করে। রাখিপূর্ণিমার রাত্রে ওরা স্টিমারে চলেছিল বদরতলা পেরিয়ে। আকাশের এক পারে শরতের চন্দ্র, অন্য পারে মেঘের মন্দ্র। সুপ্রিয় বললে, পারবে? তার হাতখানা হাতের মধ্যে নিয়ে নন্দিতা নতমুখে বললে, বােধ হয় পারব না। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনাে প্রতিজ্ঞাই থাকে না। সুপ্রিয়র কণ্ঠস্বর সেই চন্দ্রবরণ নদীর উল্লোলে উচ্ছ্বসিত দোলায় দুলে উঠল। অনাদি আর অনন্তকাল তার সেই আবেগের মুহূর্তের উপরে দাঁড়িয়ে থর থর করে কাপতে লাগল। বললে, নন্দিতা, ভুলতে ইচ্ছা করে না আমাদের সেই প্রথম পরিচয়ের উল্লাসের দোলা, আমার বুকের রক্তে যখন কবিতা লিখেছিলুম আর তুমি সেই রক্তে দুই চরণ রাঙিয়ে এসে দাঁড়ালে। স্টিমার সেদিন যেন জীবন-মরণ বিদীর্ণ করে চলেছিল পৃথিবী ছাড়িয়ে অথৈ অজানায়। সুপ্রিয়র চমক ভাঙলাে। এর মধ্যে কখন বেবি নিচে থেকে এসে তার পায়ের তলায় আশ্রয় নিয়েছে। সেদিনটা নেই বটে, কিন্তু এখন এসেছে একটা প্রকাণ্ড ব্যাপতি। 

প্রথম প্রবাহাটার সেই থরবেগ এখন মন্থর, জীবনযাত্রাটা দুই দিকে এখন বিস্তৃত, গভীর হয়েছে বলেই উপরটা প্রশান্ত, প্রথম অবস্থাটা চঞ্চলা ছিল বলেই দিশাহারা, এখন লক্ষ্যটা স্থির, তাই নিরুদ্বেগ। চুড়ির আওয়াজে সুপ্রিয় মুখ ফিরিয়ে তাকালাে। নন্দিতা ঘরে এসে দাঁড়িয়ে বললে, পায়ের তলায় এসে বুঝি ঢুকেছে? ওকে আমি তাড়াবাে। সুপ্রিয় বললে, তাড়ালে যাবে কোথায় বেচারা! কুকুরের নেশা নিয়ে তােমাকে আমি থাকতে দেব না। তুমি ছাড়া বুঝি আমার আর কোনাে নেশা থাকতে নেই? না। বলে নন্দিতা কাছে এল। সুপ্রিয়র গলাটা তার চুরিভরা দুই হাতে জড়িয়ে ধরে কাধের ওপর মুখ রেখে বললে, তােমার আর কোনাে নেশা আমার বরদাস্ত হয় না।
সুপ্রিয় বললে, কেন বলাে তাে?
শুনলে তুমি আস্পর্ধা পাবে তাই বলতে ইচ্ছা করে না।
আচ্ছা বলাে, অভয় দিচ্ছি।
নন্দিতা বললে, সহজে তাে পাইনি, পেয়েছি অনেক দুঃখে, তাই কেবলি হারাবার ভয়। তুমি আর কিছুতে মন দিতে পারবে না। সে কি ঈশ্বর চিন্তাও নয়? সুপ্রিয়র চাহনিতে ভীষণ বিস্ময়। 




নন্দিতা তার মুখখানা টিপে ধরে বললে, নাস্তিকের মুখে ঈশ্বরের নাম শােনাও পাপ। 
আর বলবে?বলবে আর?
আঃ ছাড়াে ছাড়াে, সতী নারীর চুড়ির ঘায়ে মুখখানা কেটে গেল বুঝি। বেবি এইবার কোনাে আসন্ন দুর্যোগের আশঙ্কা করে পাশ কাটিয়ে ঘর থেকে উঠে বেরিয়ে গেল। সুপ্রিয় বললে, ওর সঙ্গে তােমার একটা আড়ি আছে। হেসে নন্দিতা বললে, ও আমার চোখের বালি। ঐ যে বেরিয়ে গেল, এ বেলায় আর বাড়ি ঢুকবে না। সুপ্রিয় তার কোমরে বাঁ হাতখানা জড়িয়ে বললে, সংসারের সঙ্গে তুমি মানাতে পারাে না, তাই আমার সঙ্গে ঝগড়া বাধাও। 
তাই না? 
অমনি গোঁজামিল দিচ্ছ, কেমন?
নন্দিতা বললে, ঠিক উল্টো তােমাকে বাগ মানাতে পারিনে ঘরকন্নায়, তাই এত ঠোকাঠুকি। 

এই যে সকালবেলা থেকে বসে রইলে, করলে কি বলাে দেখি?
করতে তাে বলােনি?
বলে না দিলে বুঝতে পারাে না? বাজার হল কোত্থেকে, রান্না হল কি দিয়ে? না হয় জানলুম চাকর-বামন আছে কিন্তু খোঁজ-খবর রাখা? সুপ্রিয় বললে, এও আমাকে করতে হবে? বিয়েটা ফিরিয়ে নাও নন্দিতা, এসব আমি পারবাে না। বলল কি বাজারের হিসেব? মুদির ফর্দ? গয়লার পাওনা? একখানা চেয়ারেই দুজনে ঠেসাঠেসি করে বসল, নন্দিতা হেসে বললে, ধােপার খাতা, বাড়িভাড়া, ঘুটে-কয়লা তাছাড়া ডাক্তারি, মনিহারী, স্যাকরা, আরাে কত কি।


আমাকে মুক্তি দাও, নন্দিতা। এসব আমি পারব না।
নন্দিতা স্বামীর গায়ে মুখখানা বুলিয়ে বললে, আরাে রইল। Bank Expenses, পােস্টাপিসের খাতা, Insurance Policy, পাটকলের শেয়ার, তােমার বাড়ির খাজনা, Income Tax, সব ছাড়িয়ে তােমার চাকরি। ব্যাকুল হয়ে সুপ্রিয় বললে, সবই ঠিক, কিন্তু আমি কী অপরাধ করেছি? বিয়ে ফিরিয়ে নাও, নন্দিতা। বিয়ে আমি করিনি, ঘরকন্না আমি মানিনে। আমাকে ছেড়ে দাও, কেঁদে বাঁচি। নন্দিতা তার চিবুক নেড়ে দিয়ে বললে, তখন মনে ছিল না?
কখন গাে?
দেবদারুর ছায়ার নিচে দাঁড়িয়ে কি প্রতিজ্ঞা করেছিলে?
সুপ্রিয় বললে, তখন কে জানত, তােমাকে পাওয়া মানে এতখানি উৎপীড়ন মাথা পেতে নেওয়া? হ্যা প্রতিজ্ঞা আমি করেছিলুম, মহারানীর সকল দায়িত্ব আমি বহন করব। তবে? নন্দিতা প্রশ্ন করলে।

দাঁড়াও, তখন গয়লা-মুদি-ধোপা-কয়লাওয়ালা কেউ গিয়ে দাঁড়ায়নি। তােমার প্রেমে মজতে গিয়ে তােমার ওই বর্বর সন্তানদলের বীভৎস আক্রমণ আমাকে সইতে হবে এমন কথা তাে হয়নি? নন্দিতা বললে, তবে না হয় চলাে পালিয়ে যাই কোথাও ?
যেখানেই পালাব তােমাকে নিয়ে, সঙ্গে থাকবে এই গােলকধাঁধা আর এই প্যারাফারনালিয়া। আর যাবেই বা কোথায় তুমি তােমার এই শরীরে? স্বামীর কাঁধের ওপর মাথা রেখে নন্দিতা বললে, সব গুলিয়ে দিলে তুমি। কিসে কি হল আমিও ঠিক বুঝতে পারলুম না। সুপ্রিয় বললে, পারবে আর কিছুদিন পরে। আমি কিন্তু বলে রাখছি নন্দিতা, হয় বিয়ে ফিরিয়ে নাও, আর নয়তাে তােমার সন্তানদলের ছোঁয়াচ থেকে আমাকে বাঁচিয়ে রেখাে। বিয়ে মানে দায়িত্ব, কিন্তু দায়িত্ব মানে ভদ্রজীবনের ওপর অত্যাচার নয়। টাকাকড়ি ঘরকন্না সবই তােমার আর তুমি কেবল আমার,-এই শর্ত। নন্দিতা তার মুখের ওপর ঝুঁকে পড়ে বললে, তুমি কি সিরিয়াস? হাফ সিরিয়াস। কারণ মনের কথা হেসে না বললে তােমার দরবারে আবেদনটা পৌছবে না।




উঠে দাঁড়িয়ে নন্দিতা বললে, কোনাে শর্তে আমি সংসার করতে পারব না। তােমার যা খুশি তাই করাে। সুপ্রিয় বললে, এই অত্যাচার সইতে গিয়ে যদি আমার মৃত্যু ঘটে? ঝংকার দিয়ে নন্দিতা বললে, তবে তােমার চামড়া নিয়ে ডুগডুগি বাজাবাে।
এই বলে সে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেল। বেলা এগারােটার পর সুপ্রিয় খেয়ে দেয়ে office বেরােলাে। কিছুক্ষণ পরে দেখা গেল প্রবল উৎসাহে নন্দিতা ঘরের কাজে মন দিয়েছে। চাকরটাকে বললে, ওপরে আয় একবার আমার সঙ্গে এই বলে সে কোমর বেঁধে একটা প্রবল তাড়নায় কাজে লেগে গেল। নতুন করে ভাবতে সেও জানে। মেয়েদের সৃষ্টিশক্তি নেই, এমন মতবাদ যাদের, নন্দিতা তাদের প্রতিবাদ। নন্দিতার অত্যধিক পরিশ্রম, অতিরিক্ত ছুটোছুটি আর হাঁটাহাঁটি ডাক্তারের নিষেধ। কিন্তু আজ তাকে বাগ মানানাে যাবে না। স্বামীর মনের প্রবাহটা আবিল হলে স্ত্রীর পক্ষে দুর্দিন কিনা নন্দিতার জানবার দরকার নেই। কিন্তু পুরুষকে ঠিক বুঝতে না পারলেই নারীর মনে জমে ওঠে আশঙ্কা, তখন চুম্বন- আলিঙ্গনের আতিশয্যটাও নির্ভুল নিরাপদ বলে মনে হয় না।

পুরুষের প্রাণের চিন্তাধারার সম্বন্ধে নিঃসংশয় হতে না পারলে মেয়েদের স্বস্তি নেই। ঘণ্টাখানেক পরে দেখা গেল অতিশয় পরিশ্রমে নন্দিতার কপালে চুলের আঙটগুলি বেয়ে কোমল কয়েকটি ঘামের ধারা নেমে এসেছে গাল বেয়ে। মুখে ললিত রক্তাভা, যেন ভিতর থেকে প্রভাতের তরুণ সূর্যোদয়ের আভাস। কিন্তু আর একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, সবগুলিই ঘামের ফোটা নয়, টলটলে অশুর ধারাও নেমে এসেছে তার সঙ্গে। বিড়ম্বিত জীবন তার নয়, কিন্তু এতদিন পরে তা যেন একটা আকস্মিক ঝাপটায় মনে হচ্ছে, সর্বস্বান্ত হয়েও একজনকে আজও পরিপূর্ণ পাওয়া যায়নি, জটিল রহস্যের আঁকাবাঁকা পথ এখনও রইল সে অনেক দুরে, হয়তাে ঘােমটা সরিয়ে ধীরে ধীরে তাকে আবিষ্কার করলেই পাওয়া সহজ হত। সংশয়ের দ্বন্দ্বে আর বুঝতে না পারবি অনুতাপে নিরুপায় নন্দিতার মনে কেমন যেন একটা আসন্ন ভূমিকম্পের থরাে থরাে কম্পন এপার থেকে ওপার পর্যন্ত শঙ্কায় আকুল করে তুলেছে। ওদের ভালবাসার আগডালে সুগন্ধ ফুল ধরেছে সন্দেহ নেই, কিন্তু মৃত্তিকার নিচে মূল এখনও গভীরে নামেনি। ফুল ফোটার চেয়ে শিকড়ের দিকে কোনাে নজর নেই।

সন্ধ্যার সময় সুপ্রিয় ফিরে এল। সে আসে একটা সমারােহ সঙ্গে নিয়ে। মােটা টাকা মাইনে পায়, কিন্তু রােজ রােজ নতুন নতুন মােটরে চড়বার লােভে সে দামী ট্যাক্সি চড়ে আসে মােটর আজো কেনেনি। সঙ্গে আসে মনিহারি, ব্যাঙ্কের খাতাপত্র, চৌরঙ্গী গ্রীলের খাবার, নিউ মার্কেটের ফুল কোনাে কোনােদিন মুখরােচক অসাময়িক দামী আনাজ-তরকারি। গাড়ি থেকে নেমে এসেই স্ত্রীর দিকে চেয়ে সে একেবারে বিস্ময় স্তম্ভিত। আজ কি ভুল করে সে অন্য বাড়ি ঢুকেছে? কাছে এসে নন্দিতা বললে, দেখছ কি বােকার মতন? এই বলে মাথার টুপিটা খুলে নিলে। সুপ্রিয় শুধু বললে, হতবুদ্ধি ! অমন হাঁ করে থাকলে আমি কিন্তু সব টান মেরে খুলে ফেলব। আজ তার কপাল থেকে সিঁথির ভিতর অবধি সুদীর্ঘ বিস্তৃত সিন্দুররেখা। পরনে গঙ্গারঙের রেশমী রাঙাপাড় শাড়ী, আঁচলে চাবির গােছা, মাথায় ঘােমটা। সুপ্রিয় রাঁধুনী বামুন আর চাকরটাকে লুকিয়ে নন্দিতাকে কাছে টেনে নিল। বললে, নতুন কিনা, তাই ভালাে লাগছে। নন্দিতা বললে, আজ কিন্তু তােমাকে কোথাও যেতে দেব না। সে কি, গাড়ি আনলুম যে তােমার জন্যে! তুমিই তাে বেড়াতে যাবার জন্য পাগল, আমাকেই তাে তুমি তিষ্ঠতে দাও না।




চলাে ছাদে বেড়াবে, আজ পূর্ণিমা। গাড়ি ফিরে গেল। ঠিক বােঝা গেল না নতুন করে মিলনের আনন্দ, অথবা আজ অভিনব উপায়ে পরস্পরকে জানার আগ্রহ? রমণীর বেশ ছেড়ে আজ হঠাৎ গৃহলক্ষ্মীর ছদ্মবেশ কেন? গলা ধরাধরি করে উপরে উঠে গিয়ে সুপ্রিয় বলল, রস ঢেলে দিয়ে আজ মাতাল করবে, না অমৃত ঢেলে ঘুম পাড়াবে, নন্দনবাসিনী? সুপ্রিয়র বােতাম খােলা কোটটা মুখের উপর টেনে নন্দিতা বললে, রসটা ছেকে নিলেই অমৃত।
সঙ্গীত না সুভাষণ?
দুটো মিলিয়ে যা হয় কবিতা! ঘরে চলাে।

আরও পড়ুনঃ গল্পঃ কুয়াশায় 

ঘরে ঢুকে সুপ্রিয় অবাক হয়ে গেল। যে ঘরে সকালবেলা সে ছিল, এ ঘর সে নয়। তার চকচকে চোখের তারা চারিদিক থেকে ঠিকরে পড়তে লাগল। যা ছিল ত সবই আছে, কিন্তু ভিন্ন চেহারায়, ভিন্ন ভঙ্গিতে। পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে নয়, প্রাণ বৈচিত্র্যটাই যেন সজীব। এ দেয়ালের ছবি ও দেয়ালে, এধারের খাট ওধারে, নতুন হয়ে এসেছে ফুলদানি, চায়না গ্লাস ঘুরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে দক্ষিণে, মখমলের জাজিমে রেশমী তাকিয়া, পােট্রেট-গুলাের বদলে ল্যান্ডস্কেপ এসে সমস্ত ঘরখানার ভিতরে কল্পনার একটা অসীম ব্যাপ্তি এনে দিয়েছে। পর্দা সরিয়ে ঘরের ভিতর দিয়ে অন্য ঘরে নন্দিতা স্বামীকে নিয়ে গেল। এ আবার নতুন জগৎ | এধারে সােফা আর ইজিচেয়ারের সেট, ওধারে পিয়ানাে। দেয়ালের গায়ে গায়ে বইয়ের আলমারি, কোণে কোণে পিতল আর পাথরের পুতুল, মাঝখানে কাচের টেবিলের উপর চীনা আর তিব্বতী কিউরিয়ে, জানলার স্ক্রীনগুলিতে সুন্দর কারুকলা চিত্রিত।
সুপ্রিয় বললে, পেলে কোথায় এত!
নন্দিতা বললে, সবই ছিল।
দেখতে পাইনি তাে?
চোখ ছিল না তােমার। এসাে, এবার কাপড় ছাড়বে।

শােবার ঘরে এনে সুপ্রিয়কে খাটের উপর বসিয়ে নন্দিতা তার পায়ের জুতোটা আর মােজা নিলে। ঠাকুর খাবার নিয়ে এল হাতে করে। কচুরি, নিমকি আর সন্দেশ দেখে সুপ্রিয় বললে, কিরকম যেন একটা ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছি। হঠাৎ আজকে এমন রাজোচিত আতিথেয়তা আরম্ভ হল কেন ব্যাপারটা কি বলাে তাে ঠাকুর ?
ঠাকুর টিপাইয়ের উপর খাবার আর জল রেখে যাবার সময় বললে, সবই মা তৈরি করেছেন।
লক্ষণ ভালাে নয়। যুদ্ধের চেয়ে সন্ধির চেহারা দেখলেই আমার ভয় করে।
কেন?-নন্দিতা হাসিমুখে প্রশ্ন করলে।
মনে হয় তখন বুঝি তােমাকে আর চিন্তে পাচ্ছিনে।
ঝগড়া করে কী হবে?
সুপ্রিয় বললে, এতেও আমার দুশ্চিন্তা। তুমি চুপ করে থাকলেই মনে হবে দূরে সরে যাচ্ছ। তােমার মুখ বন্ধ হলেই আমার হবে পরাজয়। আমি সীতাও চাইনে, দ্রৌপদীও নয়, আমি চাই সুভদ্রাকে। আমার হাতে ধনুর্বাণ, তার হাতে অশ্ববলগা!
হয়েছে। এবার ‘বীরের তনুতে লহ তনু।
এই বলে উঠে নন্দিতা হাত ধুয়ে স্বামীর মুখে একখানা কচুরি পুরে দিল, তারপর সুপ্রিয়ের কোমরের বােতামগুলি খুলে ট্রাউজার ছাড়িয়ে নিয়ে ধুতিখানা জড়িয়ে দিতে লাগল।

মাস পাঁচেক পরে অত্যন্ত উদ্বেগ নিয়ে সুপ্রিয় সেদিন সন্ধ্যার সময় হাসপাতালে খবর নিতে এল। ডাক্তার হাসিমুখে বললেন, কেবিনে যান, আপনার স্ত্রী ভালাে আছেন। মুখের উপরকার অস্বস্তির ছায়া আনন্দে রূপান্তরিত হল। সুপ্রিয় সােজা দোতালায় উঠে গিয়ে সাত নম্বর কেবিনে ঢুকল। নার্স নমস্কার জানিয়ে বললে, সন্দেশ আনুন। সুপ্রিয় হাসল, তারপর আড়ষ্ট পা দুখানা টেনে নন্দিতার কাছে এসে দাঁড়াল। আজ আবার স্ত্রীর সঙ্গে তার নতুন করে পরিচয়। লজ্জা নয়, কিন্তু আনন্দের অস্বস্তিতে নন্দিতা বালিশে মুখ লুকিয়ে রইল ; মিনিট দুই পরে দেখা গেল, তার নাক বেয়ে অশ্রুর ধারা গড়িয়ে পাশের নবজাত সুন্দর শিশুর ছােট বালিশটিও ভিজে গেছে। নার্স বাইরে গেল।

মাথার কাছে বসে রুমাল দিয়ে সুপ্রিয় নন্দিতার চোখ মুছিয়ে দিল। হাতখানা একটু কাপল। রমণী রূপান্তরিতা জননীতে আজ তাকে যােগ্য সম্রম না দিলে আর চলবে না। সুপ্রিয়ের হাতখানা আবার সন্তর্পণে ফিরে এল। কিন্তু অশ্রু কেন আজ?
হয়তাে নন্দিতার সেই জীবনটা এবার মুছে গেল সেই দেওদারের ছায়াপথ, প্রিয়-সান্নিধ্যে সেই অপরূপ জ্যোৎস্নার অবগাহন, চৌরঙ্গীর আবেশ-বিহ্বল স্বপ্নলােক, তরুণ কৌমার্যের মালঞে বাসরশয্যা। সেই জীবনের বিচ্ছেদ-বেদনা আর এই নূতন জীবনের আনন্দ হয়তাে এই অশ্রুতে তার বিচিত্র সংমিশ্রণও ছিল। সুপ্রিয় নতমস্তকে নূতন শিশুটির দিকে চেয়ে রইল। অনেকক্ষণ পরে মুখ ফিরিয়ে নন্দিতা বললে, বাড়ির খবর কি? ঠাকুর চাকর আছে তাে?
আছে।

ঠিক সময়ে খাওয়া-দাওয়া হয়?
হা।
ভাঁড়ারের চাবিটা নিজের কাছে রাখাে তাে?
হ্যা।
একটু চুপ করে থেকে নন্দিতা বললে, কুকুরটার খোঁজ পেলে কিছু? নিশ্বাস ফেলে সুপ্রিয় সজাগ হয়ে বললে, হ্যা দশ বারাে দিন পরে কাল সকালে দেখি, আমাদের বার বাড়ির সিঁড়ির তলায়। পােড়ারমুখী ছিল কোথায় এ ক-দিন?
সুপ্রিয় হেসে বললে, আরে সেই কথাই তাে বলছি। তােমার ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল। চেহারা দেখে সন্দেহ হল, সিঁড়ির তলায় ঢুকে দেখি বেবির তিনটে বাচ্চা হয়েছে।
আঁ? 
বাচ্চা গাে। একটা নয়, তিন তিনটে। আর তাকে তাড়াতে তােমার মন উঠবে না দেখাে। কী সুন্দর দেখতে হয়েছে বাচ্চাগুলাে।

@ 👉 Love Stories in Bengali গল্পটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার এবং কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না…..

Leave a Comment

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now